উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির দায় কেন্দ্র এবং ডিভিসি-র ওপর চাপানোয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী ‘পরিকল্পিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এখানে বন্যা তৈরি করেছে’— এই মন্তব্য করায় তিনি প্রকৃত ঘটনা জানতে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA) তদন্তের দাবি তুলেছেন।

মঙ্গলবার শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কিছু অবাস্তব কথা বলে যাচ্ছেন। আবার কখনো তিনি বলে যাচ্ছেন পরিকল্পিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এখানে বন্যা তৈরি করেছে। এই ধরণের কথাটা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ বলতে পারে না। রাজ্যের এই পরিস্থিতির জন্য আমরা এনআইএ তদন্তের দাবি করছি। কারণ বারবার এই পরিস্থিতি চলতে পারে না।”

‘তৃণমূল কংগ্রেসের কুকর্মের ফল’
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি তুলে ধরে শমীক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন যে, এই বিপর্যয় আসলে তৃণমূল সরকারের কুকর্মের ফল। তিনি বলেন,

“জলপাইগুড়িতে এক হাজারের বেশি বাড়ি ভেঙ্গে গেছে, কোচবিহারের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল জমে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

“এর থেকে বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের কুকর্মের ফলে এই পরিস্থিতি মানুষকে আজ সহ্য করতে হচ্ছে।”

‘মোচ্ছবের সরকার’ ও বিভাজনের অভিযোগ
মুখ্যমন্ত্রী পুজো কার্নিভালে যোগ দেওয়ায় শমীক ভট্টাচার্য তৃণমূল সরকারকে ‘মোচ্ছবের সরকার’ বলে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “এই সরকার আসলে মোচ্ছবের সরকার, কার্নিভালের সরকার। এই সরকার মানুষের ভালো করতে পারেনি। তারা কার্নিভালে অংশগ্রহণ করছেন অথচ দুর্যোগ মোকাবিলায় দলকে সময়মতো পাঠাতে ব্যর্থ।”

এছাড়াও, ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে তিনি সরাসরি বিভাজনের অভিযোগ এনেছেন। শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “ত্রাণ দিতে গিয়ে মুসলিম এলাকায় বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। অর্থাৎ এই বিভাজন পশ্চিমবঙ্গকে শেষ করে দিচ্ছে দিনে দিনে।”

বিজেপি রাজ্য সভাপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যাঁরা ভাবছেন পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষদের হাঁটিয়ে রাজত্ব করবেন তাঁরা ভুল ভাবছেন। মানুষ এবার প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে একটা রাজ্যকে ধ্বংস করা যায় না। সরকার পরিচালনা করার কোনো যোগ্যতাই তৃণমূল কংগ্রেসের নেই।”

এদিকে, এই কঠিন পরিস্থিতিতে দলের পক্ষ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও জানান শমীক ভট্টাচার্য। তিনি নিশ্চিত করেন যে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং নিজে ফোন করে পুরো ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন।