স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষা, চা খেতে গিয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন যাত্রী! রেল পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ

ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই স্টেশনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন এক যাত্রী। সোমবার সন্ধ্যায় শিয়ালদা-বনগাঁ শাখার বামনগাছি স্টেশনে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। মৃত যাত্রীর নাম অর্জুন মণ্ডল (৬০), তাঁর বাড়ি মছলন্দপুরের চারঘাট এলাকায়। অভিযোগ উঠেছে, অসুস্থ হয়ে ওই যাত্রীর মৃত্যুর পরেও তাঁর দেহ দীর্ঘক্ষণ স্টেশনেই পড়ে ছিল এবং এই বিষয়ে রেল পুলিশের কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না।

চা খেতে গিয়েই হৃদরোগে আক্রান্ত
জানা গিয়েছে, কাজের সূত্রে অর্জুন মণ্ডলের স্ত্রী ও মেয়ে বামনগাছি এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। সোমবার বিকেলে ওই প্রৌঢ় স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে বামনগাছিতে এসেছিলেন। সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফেরার উদ্দেশে তিনি স্টেশনে আসেন।

ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময় তিনি স্টেশন চত্বরে একটি দোকানে চা-খেতে যান। সেই সময়েই হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্টেশনে থাকা স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে বুঝতে পারেন যে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয়রা তাঁর চোখে-মুখে জল দিয়ে সেবা-শুশ্রূষার চেষ্টা করেন এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভ্যানও ডেকে আনা হয়। কিন্তু ততক্ষণে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অর্জুন মণ্ডল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

‘সময়মতো এলে বাঁচানো যেত’
এই মর্মান্তিক ঘটনাকে ঘিরে রেলের বিরুদ্ধে চরম অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি,

ঘটনার সময় স্টেশনে জিআরপি (GRP) ও আরপিএফ (RPF) উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তাঁদের থেকে কোনো সাহায্য মেলেনি।

এমনকী, স্টেশনমাস্টারের ঘর থেকে মাইকের মাধ্যমে রেল পুলিশকে ডাকা হলেও অনেকক্ষণ পর সেখানে পৌঁছন তাঁরা।

স্থানীয়দের একাংশের মনে করছেন, সময়মতো রেল পুলিশকর্মীরা পৌঁছলে ওই যাত্রীকে হয়তো বাঁচানো যেত।

যদিও রেল পুলিশ গাফিলতি কিংবা অব্যবস্থার অভিযোগ মানতে রাজি নয়। বারাসত জিআরপি’র ওসি ধর্মেন্দ্র সিং বলেন, “রেল পুলিশের গাফিলতি নিয়ে কোনো অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আসেনি। তবে যতদূর জানি রেল পুলিশ ঘটনার কথা জানার পরেই সেখানে গিয়েছিল। যা যা পদক্ষেপ করার, সবই করেছিল।”

পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নিহতের পরিবার। আসেন ছোট জাগুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অমল দাসও, যিনি অসহায় এই পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।