ত্রাণ দিতে গিয়ে রণক্ষেত্র! ফের বিধায়ক মনোজ ওঁরাওকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ, লাঠি উঁচিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তাণ্ডব

উত্তরবঙ্গে বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে যেন ক্ষোভের আগুন থামছেই না। একদিন আগে সাংসদ খগেন মুর্মু আক্রান্ত হওয়ার পর এবার ফের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাও। ত্রাণ দিতে গিয়েও মঙ্গলবার কুমারগ্রামের বিথিবাড়িতে তাঁকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা, যা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যেতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে!
সোমবারের পর মঙ্গলবারেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল বিজেপি বিধায়কের ক্ষেত্রে। বিক্ষোভের মুখে পড়ে তাঁর চারটি গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। এমনকি, দুই জন মহিলাও হামলায় ‘আক্রান্ত’ হয়েছেন বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের।
বিধায়কের অভিযোগ: নেপথ্যে তৃণমূল
বিধায়ক মনোজ ওঁরাওয়ের অভিযোগ, তিনি কোনো রাজনীতি করতে যাননি, কেবল বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও তাঁকে ঘিরে যে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে, তার নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। ঘটনার ভিডিও তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতেও শেয়ার করেছেন। বিজেপি এই ঘটনাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ এবং ‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের কাজ’ বলে দাবি করেছে।
তৃণমূলের দাবি: পুরোটাই জনরোষ
অন্যদিকে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, এর সঙ্গে দলের কোনো যোগাযোগ নেই। তৃণমূলের বক্তব্য, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকার মানুষের কোনো যোগাযোগ না থাকায় এই ঘটনাটি ‘পুরোটাই জনরোষের’ প্রতিফলন। মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে, তাই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।
উত্তরবঙ্গে অব্যাহত অশান্তি: এক নজরে
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গে বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের ওপর হামলার ঘটনা এই প্রথম নয়।
সোমবার: নাগরাকাটায় গিয়ে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সাংসদ খগেন মুর্মুর চোখে ঢিল পড়ায় তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। শঙ্কর ঘোষও নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ ওঠে।
মঙ্গলবার: খগেন মুর্মু যখন শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালের ICU-তে ভর্তি, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তাঁকে দেখতে যান এবং কথা বলেন। যদিও তিনি শঙ্কর ঘোষের সঙ্গে দেখা করেননি।
আজ: ফের কুমারগ্রামে ত্রাণ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিধায়ক মনোজ ওঁরাও।
বিজেপি এই সব ঘটনার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করে ‘পরিকল্পিত হামলা’র অভিযোগ তুললেও, তৃণমূলের দাবি – এগুলি স্রেফ জনরোষ। উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গায় বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে এমন লাগাতার বিক্ষোভের ঘটনা আসন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।