প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আরএসএসকে নিয়ে বিতর্কিত কার্টুন তৈরি করে আইনি জটে জড়ানো কার্টুনিস্ট হেমন্ত মালব্য সুপ্রিম কোর্টেও অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন না। হাইকোর্টে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার পর এবার শীর্ষ আদালতও তাঁর আবেদন গ্রহণ করেনি। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়ে বিতর্কিত কার্টুন আঁকা মত প্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহার। রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়ে আপত্তিকর কার্টুনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।

শীর্ষ আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণ:

সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চ কড়া মন্তব্য করে। আদালত জানায়, বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে অপব্যবহার করা হচ্ছে। বেঞ্চের মতে, কিছু কার্টুনিস্ট ও স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান এই স্বাধীনতার অপব্যবহার করছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৫ জুলাই ধার্য করা হয়েছে।

অভিযোগ ও আইনি ধারা:
হেমন্ত মালব্য প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি শেয়ার করেন, যার অধিকাংশই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীতির সমালোচনা করে আঁকা। সম্প্রতি ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতি, ট্রাম্পের ভূমিকা, এমনকি করোনা সময়কালেও তিনি মোদিকে কটাক্ষ করে পোস্ট করেছিলেন। এরপর আরএসএসের এক কর্মী তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, হেমন্ত মালব্য ভগবান শিবকে নিয়ে কার্টুন এঁকে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। এই অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৬, ১৯৯ ও ৩৫২ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত হেমন্ত মালব্যকে গ্রেফতার করা হয়নি, তবে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং তাঁকে সমন পাঠিয়ে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।

গ্রেফতারির আশঙ্কা বৃদ্ধি:

এই পরিস্থিতিতে গত ৩ জুলাই মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়েছিলেন কার্টুনিস্ট, যা খারিজ হয়ে যায়। এবার সুপ্রিম কোর্টেও জামিনের আবেদন গ্রহণ না হওয়ায় হেমন্ত মালব্যের গ্রেফতারির আশঙ্কা আরও জোরালো হলো।

এই ঘটনাটি বাক স্বাধীনতা এবং এর অপব্যবহারের সীমারেখা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে এই মামলার রায় নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।