কল্যাণের কাজে খুশি নবান্ন, গুরু দায়িত্ব দিল রাজ্য সরকার, তৃণমূল-বিজেপির জোর তরজা

কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে এবার আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পেতে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ তথা প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের বিশেষ কৌশলী বা স্পেশাল কাউন্সিল হিসেবে তাঁর নাম পাকাপাকিভাবে প্যানেলে যুক্ত হতে চলেছে। এতদিন গুরুত্বপূর্ণ মামলায় বিশেষ কৌশলী হিসেবে কল্যাণের ওপর ভরসা রেখে এসেছে নবান্ন। এবার তাঁকে স্থায়ীভাবে এই ভূমিকায় দেখা যাবে।

কল্যাণের আইনি সাফল্য

সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের পক্ষে বিশেষ কৌশলী হিসেবে সওয়াল করেছেন কল্যাণ। এর আগেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তিনি রাজ্যের স্বার্থ রক্ষায় আদালতে সোচ্চার হয়েছেন। সূত্রের দাবি, এই মামলাগুলিতে কল্যাণের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ নবান্নের শীর্ষ মহল। এ কারণেই তাঁর নাম রাজ্যের বিশেষ আইনজীবীদের তালিকায় স্থায়ীভাবে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিজেপির কটাক্ষ

এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিতর্কও শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জেনারেলের (এজি) ক্ষমতা খর্ব করতে কল্যাণকে তাঁর ওপরে বসাতে চাইছেন। এটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।” কৌস্তভের দাবি, মার্চের প্রথম সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী এ সংক্রান্ত ফাইলে সই করলেও বিজ্ঞপ্তি এখনও জারি হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে বিজ্ঞপ্তি আটকে রয়েছে। অভিষেক নাকি চান, তাঁর কোনও অনুগামী এই পদে আসীন হোক।

কল্যাণের পাল্টা জবাব

কৌস্তভের এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে তিনি বলেন, “নতুন কোনও পদ তৈরি হচ্ছে না। আমি সাংসদ হিসেবে সরকারি পদ গ্রহণ করতে পারি না। অ্যাডভোকেট জেনারেলের ওপরে কাউকে বসানো সম্ভব নয়। সরকার যে কাউকে বিশেষ কৌশলী নিয়োগ করতে পারে, এতে এজির ক্ষমতা খর্ব হয় না। আমার নাম শুধু প্যানেলে যুক্ত হচ্ছে। আমি প্রবীণ আইনজীবী, আমাকে সম্মান দেওয়া হলে কৌস্তভের রাগের কী আছে? উলটে তিনি কিছু করতে না পেরে মাথার চুল কেটে ঘুরছেন।” এই ভাষায় কৌস্তভকে কটাক্ষ করেন কল্যাণ।

রাজনৈতিক তরজা

কল্যাণের এই ভূমিকা বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তরজা তীব্র হয়েছে। যদিও কল্যাণ স্পষ্ট করেছেন, এটি কোনও নতুন পদ নয়, বরং রাজ্যের আইনি লড়াইয়ে তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর একটি পদক্ষেপ। এখন দেখার, এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি কবে জারি হয় এবং তা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক কোন দিকে যায়।