মেয়ে এসেছে ঘরে, আনন্দে গ্রাম জুড়ে ৩ দিনের ভুরিভোজের আয়োজন মা-বাবার

যেখানে কন্যা ভ্রূণ হত্যার ঘটনা প্রায়শই শোনা যায়, সেখানে কোচবিহারের ছোটলাউকুঠি গ্রামের এক পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্ম নিয়ে গোটা গ্রাম উৎসবে মেতে উঠেছে। সাদ্দাম হোসেন ও জাহানারা বিবির ঘরে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে, যাকে তারা সিমরন নাম দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তিন দিনব্যাপী ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ মনোরঞ্জন দাস জানিয়েছেন, মা ও শিশু উভয়েই সুস্থ আছেন।

সাদ্দাম হোসেনের দুই ছেলে আছে। তবুও তিনি মেয়েকে ঘরের অহঙ্কার বলে মনে করেন। তিনি তার মেয়েকে চিকিৎসক বানাতে চান। জাহানারা বিবিও মেয়েকে পরিবারের সম্মান বলে মনে করেন।

সাদ্দাম বলেন, ‘সাধপূরণ হয়েছে। মেয়ে ঘরের অহঙ্কার। এইবার আমার ঘর পূর্ণ হলো।’ মেয়েকে চিকিৎসক করতে চান সাদ্দাম। বলছেন, ‘ওর পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখব না। তার জন্য যতটা প্রয়োজন পরিশ্রম করব।’

পাড়া-পড়শিদের ভিড় লেগেই রয়েছে বাড়িতে। সকলে এসে মেয়েকে আশীর্বাদ করছেন। মোবাইলে সে সব মুহূর্ত ধরে রাখছেন সাদ্দাম। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই জাহানারা বললেন, ‘মেয়ে পরিবারের বোঝা হবে কেন! মেয়ে হলো পরিবারের সম্মান।’

সাদ্দাম ও জাহানারার এই গল্পটি সমাজের জন্য একটি উদাহরণ। এটি দেখায় যে, কন্যা সন্তানকে অবহেলা করা বা হত্যা করা কোনো সমাধান নয়। কন্যা সন্তানরাও পুত্রসন্তানের মতোই পরিবারের সম্পদ। এই গল্পটি সমাজের মধ্যে কন্যা সন্তানের প্রতি একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।

এই ঘটনা সরকারের কন্যা সন্তান বাঁচাতে চালানো প্রচারণার সাফল্যের প্রমাণ দেয়। সাদ্দাম ও জাহানারার মতো অনেকেই এই প্রচারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে।

এই গল্পটি সমাজে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। কন্যা সন্তানের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে।

আমাদের সকলকে মিলে এই ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তনকে আরও জোরদার করতে হবে। কন্যা সন্তানদের সমান অধিকার দিতে হবে এবং তাদেরকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে।