পহেলগাঁও হামলায় ২৬ পর্যটক হত্যা! গোয়েন্দা রিপোর্টে ফাঁস ভয়ঙ্কর তথ্য, কে সাজিয়েছিল ছক?

জম্মু ও কাশ্মীরেরে পহেলগাঁওতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটককে হত্যার ঘটনায় সর্বশেষ গোয়েন্দা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রাথমিক ভাবে যে ধারণা করা হচ্ছিল, এটি কোনও সাধারণ জঙ্গি সংগঠনের কাজ, সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করে গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ISI এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তইবা-র সরাসরি হাত রয়েছে। এমনকি, এই হামলায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতা ও সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশ ছিল বলেও রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
হামলার আগে ধর্ম জিজ্ঞাসা: মুম্বই হামলার অনুকরণে ছক!
গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, এই হামলা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত এবং ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার অনুকরণে এর ছক কষা হয়েছিল। নিহত ২৬ জন পর্যটককে হত্যার আগে জঙ্গিরা তাঁদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করেছিল, যা হামলার নৃশংসতা ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা দেয়। ভারত ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের জড়িত থাকার প্রমাণ পেশ করেছে, এবং এই নতুন রিপোর্ট সেই দাবিকে আরও জোরালো করেছে।
নেতৃত্ব দিয়েছিল পাকিস্তানের স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো!
এই ভয়াবহ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিল জঙ্গি সুলেমান, যাকে পাকিস্তানের স্পেশাল ফোর্সের একজন সন্দেহভাজন কমান্ডো হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জানা গেছে, ২০২২ সালে লাইন অফ কন্ট্রোল (LoC) পার করে ভারতে ঢোকার আগে সে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে লস্করের মুরিদকে ঘাঁটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তার সাথে আরও দুই পাকিস্তানি জঙ্গি এই হামলায় যুক্ত ছিল।
দুই বছর ধরে আত্মগোপনে ছিল সুলেমান
স্যাটেলাইট ফোন ট্র্যাক করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে, হামলার এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল, সুলেমান ট্রালের জঙ্গলে আত্মগোপনে ছিল। শুধু তাই নয়, সে ২০২৩ সালে পুঞ্চে একটি সেনা ট্রাকে হামলায় জড়িত ছিল, যেখানে পাঁচ জন সেনা শহিদ হন। এরপর থেকেই সুলেমান আত্মগোপনে ছিল।
পুলিশ ও তদন্তের অগ্রগতি
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানি জঙ্গি হাশিম মুসা ও আলি ভাইয়ের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ করলেও, এখনও পর্যন্ত কেবল সুলেমানের নামই নিশ্চিতভাবে সামনে এসেছে। স্থানীয় জঙ্গি আদিল হুসেন থোকারের ভূমিকার কোনও নিশ্চিত প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সহায়তায় গ্রেফতার ২: অজান্তে জড়িত থাকার দাবি
গত মাসে NIA (National Investigation Agency) পারভেজ আহমেদ জোথার ও বশীর আহমেদ জোথার নামে দুই স্থানীয় বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে। জানা গেছে, মাত্র কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে তারা জঙ্গিদের খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য লজিস্টিক সহায়তা দিয়েছিল। তবে তারা দাবি করেছে যে, হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা ছিল না।
উপত্যকায় এখনও সক্রিয় বিদেশি জঙ্গিদের সংখ্যা
গোয়েন্দা সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কাশ্মীর উপত্যকায় প্রায় ৬৮ জন বিদেশি জঙ্গি এবং ৩ জন স্থানীয় জঙ্গি সক্রিয় রয়েছে। এই তথ্য উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য একটি উদ্বেগের কারণ।