“বিজেপি বাই!” নতুন স্লোগান বেঁধে দিয়ে ২০২৬-এর যুদ্ধের দামামা বাজালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া চলায় যখন প্রশাসনিক ব্যস্ততা তুঙ্গে, ঠিক তখনই ভোটের ময়দানে এক কদম এগিয়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার বিকেলে দলের প্রায় ১৫ হাজার পদাধিকারীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল স্থির করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১লা জানুয়ারি থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হচ্ছে শাসকদলের নতুন মেগা ক্যাম্পেইন— ‘বাংলার সমর্থনের সংযোগ’।

অভিষেক এ দিন স্পষ্ট করে দেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচন আসলে একটি ‘যুদ্ধ’। আর এই যুদ্ধে শিথিলতার কোনও জায়গা নেই। নেতাদের প্রতি তাঁর কড়া হুঁশিয়ারি, “এক মিনিট বিশ্রাম নিলেই বিরোধীরা আক্রমণ করবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় কোনও ঔদ্ধত্য দেখানো চলবে না।” বরং নিজের ব্যবহার এমন করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ সংগ্রামের ছায়া দেখতে পান। এমনকি শাসকদলের গত ১৫ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান বা ‘রিপোর্ট কার্ড’ বিরোধী দলের সমর্থকদের বাড়িতেও পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এ দিনের বৈঠকে অভিষেক একটি বড় ঘোষণা করেন। প্রতিটি জেলায় একজন করে নতুন ‘কো-অর্ডিনেটর’ নিয়োগ করা হবে। জেলা সভাপতিরা নিজেদের কাজ করলেও, এই কো-অর্ডিনেটররা সরাসরি শীর্ষ নেতৃত্বের ‘চোখ-কান’ হিসেবে কাজ করবেন এবং জনসংযোগের প্রকৃত রিপোর্ট দেবেন। অভিষেক নিজেও ২রা জানুয়ারি থেকে এই কর্মসূচিতে পথে নামছেন। পাশাপাশি, বিএলএ-২ (BLA-2) কর্মীদের ‘বাংলার ভোটাধিকার রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী’ বলে সম্মান জানিয়ে তাঁদের পা ছুঁয়ে প্রণাম করার নির্দেশ দিয়েছেন নেতাদের। প্রচারের সময় নেতাদের হোটেলে খাওয়া দাওয়া করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কর্মীদের বাড়িতে পাত পেড়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তবে এ দিনের বৈঠকের সেরা চমক ছিল পাল্টা স্লোগান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই’ স্লোগানকে তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক নতুন স্লোগান বেঁধে দেন— ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি বাই’। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্লোগানের আড়ালে ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে। তাই তৃণমূলের পাল্টা হুঙ্কার হবে— “মানবে না হার, তৃণমূল আবার”। ২০২৯-এর লক্ষ্যে ২০২৬-এর ভিত মজবুত করতে এখন থেকেই অল-আউট ঝাঁপানোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড।