শালপাতায় হাঁসের মাংস আর মাংস পিঠে! জিভে জল আনা স্বাদে মাতোয়ারা জঙ্গলমহলের খাদ্য মেলা

শীতের কনকনে ঠাণ্ডার রাতে যদি পাতে পড়ে ধোঁয়া ওঠা সাদা মোটা চালের ভাত আর শালপাতায় পরিবেশিত লাল লাল দেশি মুরগির ঝোল, তবে রসনা তৃপ্তিতে আর কী-ই বা চাই! জঙ্গলমহলের সেই আদি ও অকৃত্রিম স্বাদ নিয়ে বাঁকুড়ার খাতড়ায় শুরু হয়েছে ‘খাদ্য মেলা ২০২৫’। এ-টিম গ্রাউন্ডের আলো-ঝলমলে পরিবেশে পা রাখতেই নাকে ভেসে আসছে ভুনো মশলার ঝাঁঝ আর পিঠে-পুলির মিষ্টি সুবাস।

পাঁচ দিন ব্যাপী এই মেলাকে কেন্দ্র করে কার্যত উৎসবে মেতেছে খাতড়া শহর। এবারের খাদ্য মেলার তুরুপের তাস হলো জঙ্গলমহলের সাবেকি ও ঐতিহ্যবাহী খাবার। শহরের যান্ত্রিকতা থেকে দূরে মাটির কাছাকাছি খাবারের স্বাদ নিতে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এমনকি কলকাতা থেকেও ভোজনরসিকরা ভিড় জমাচ্ছেন এখানে। মেলার মূল আকর্ষণ হলো শালপাতায় মোড়া ‘শালপাতা চিকেন’ এবং বিশেষ ‘মাংস পিঠে’। মাটির উনুন, কাঠের আঁচ আর ঘরোয়া দেশি মশলায় তৈরি এই পদগুলোর স্বাদ যেন অমৃত।

মাংসের পাশাপাশি মেলার আরেকটি প্রধান আকর্ষণ হলো ‘উৎকল পিঠে স্টল’। উৎকল সম্প্রদায়ের মানুষের হাতের জাদুতে তৈরি চাঁচির কাঁখরা, পাটিসাপ্টা এবং দুধ পুলির স্বাদ নিতে লম্বা লাইন পড়ছে স্টলগুলিতে। বিশেষ করে চালের রুটি আর হাঁসের মাংসের যুগলবন্দী জয় করে নিয়েছে আগত পর্যটকদের মন। রাত যত বাড়ছে, শীতের আমেজকে সঙ্গী করে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভোজনরসিকদের আনাগোনা। আদিবাসী সংস্কৃতি আর জঙ্গলমহলের খাঁটি স্বাদকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসা এই মেলাটি বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গের সেরা ডেস্টিনেশন হয়ে উঠেছে।