‘আমি তো নিচু হতে জানি না!’ জেল থেকে এইমস— প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অদম্য রসবোধে আজও মুগ্ধ বিশ্ব

ভারতীয় রাজনীতির আকাশে অটল বিহারী বাজপেয়ী ছিলেন এমন এক নক্ষত্র, যাঁর রসবোধ আর বুদ্ধিমত্তার কাছে কট্টর বিরোধীরাও নতি স্বীকার করতেন। ১০১তম জন্মবার্ষিকীতে সেই মহান জননেতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বেশ কিছু অজানা ও মজাদার ঘটনার কথা শোনালেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।

রাজনাথ সিং মনে করিয়ে দেন ১৯৯৯ সালের সেই বিখ্যাত লাহোর সফরের কথা। পরমাণু পরীক্ষার পর দুই দেশের উত্তেজনা কমাতে বাজপেয়ী পা রেখেছিলেন পাকিস্তানে। সেখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এক পাকিস্তানি মহিলা সাংবাদিক সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন অটলজিকে। তিনি আবদার করেন, বিয়ের উপহার হিসেবে তাঁকে ‘কাশ্মীর’ দিতে হবে। উপস্থিত সকলে যখন থতমত, তখন অটলজি স্বভাবজাত হাসিতে ফেটে পড়ে জবাব দেন, “আমি আপনাকে বিয়ে করতে প্রস্তুত, তবে যৌতুক হিসেবে কিন্তু আমাকে পুরো পাকিস্তানটাই দিতে হবে!” এই এক লাইনেই কুপোকাত হয়েছিল পাক সংবাদমাধ্যম।

জরুরি অবস্থার সময়ের এক কাহিনিও তুলে ধরেন রাজনাথ। কোমরের যন্ত্রণায় এইমস-এ ভর্তি অটলজিকে ডাক্তার জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “বেশি নিচু হওয়ার (Bent down) জন্য কি ব্যথা হয়েছে?” অটলজির সপাট জবাব ছিল, “কোথাও হয়তো মোচড় লেগেছে, কারণ নিচু হওয়া তো আমার স্বভাবে নেই।” তাঁর এই আত্মমর্যাদাপূর্ণ রসবোধ আজও রাজনৈতিক কর্মীদের অনুপ্রেরণা জোগায়।

এমনকি ২০০৬ সালে কংগ্রেস জমানায় বিদেশমন্ত্রী নটবর সিংয়ের পদত্যাগ নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, সাংবাদিকরা অটলজিকে প্রশ্ন করেছিলেন— “নটবর সিংকে কি বলির পাঁঠা বানানো হলো?” হাসিমুখে নিরামিষভোজী অটলজির উত্তর ছিল, “আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না, আমি তো নিরামিষাশী (Vegetarian)!” ১০১তম জন্মবার্ষিকীতে রাজনাথ সিংয়ের মুখে এই গল্পগুলো প্রমাণ করে দিল যে, অটল বিহারী বাজপেয়ী কেবল একজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক কালজয়ী ব্যক্তিত্ব।