দুঃসাহস নাকি বোকামি? যমদূত স্টোনফিশকে হাতের তালুতে নিয়ে অবিশ্বাস্য কান্ড ঘটালেন এক যুবতী!

প্রকৃতি যেমন সুন্দর, তেমনই রহস্যময় এবং ভয়ংকর। আমাদের পৃথিবীতে এমন কিছু প্রজাতির মাছ রয়েছে যারা দেখতে অতি সাধারণ হলেও আসলে চলন্ত যমদূত। এমনই এক মাছ হলো ‘স্টোনফিশ’ (Stonefish)। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ঝড়ের বেগে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক তরুণী খালি হাতে সমুদ্রের তলদেশ থেকে একটি পাথর সদৃশ মাছ তুলে আনছেন। কিন্তু ভিডিওটি দেখার পর নেটিজেনদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে, কারণ ওই তরুণীর হাতের তালুতে থাকা নিরীহ দর্শন মাছটি আসলে বিশ্বের সবথেকে বিষাক্ত মাছ।

কেন এই মাছটি এত বিপজ্জনক? বিজ্ঞানীদের মতে, স্টোনফিশ হলো পৃথিবীর অন্যতম প্রাণঘাতী সামুদ্রিক জীব। এর বিষ সাপের থেকেও মারাত্মক হতে পারে। এই মাছটি মূলত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অগভীর জলে বাস করে। এর সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর ‘ছদ্মবেশ’। এটি দেখতে অবিকল সমুদ্রের তলায় পড়ে থাকা শ্যাওলা ধরা পাথরের মতো। ফলে অজান্তেই কেউ এর ওপর পা দিয়ে ফেললে বা স্পর্শ করলে মুহূর্তের মধ্যে বিপদ নেমে আসে।

এক ছোঁয়ায় মৃত্যু নিশ্চিত: স্টোনফিশের পিঠে ১৩টি তীক্ষ্ণ কাঁটা থাকে, যা দিয়ে এটি নিউরোটক্সিক বিষ প্রয়োগ করে। এই বিষ শরীরে প্রবেশ করা মাত্র অসহ্য যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে পক্ষাঘাত (Paralysis) এমনকি হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণীটি অত্যন্ত সাহসের সাথে সেটিকে ধরে রয়েছেন, যা দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি নিছক বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। সামান্য একটি ভুলই ওই তরুণীর প্রাণ কেড়ে নিতে পারত।

ভাইরাল ভিডিও ও প্রতিক্রিয়া: টুইটারে (X) ‘@dreamsNscience’ নামক হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার করা এই ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি ইতিমধ্যেই প্রায় ২ লক্ষ মানুষ দেখে ফেলেছেন। কমেন্ট বক্সে সাধারণ মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বলছেন, “সাহস আর বোকামির মধ্যে খুব সূক্ষ্ম পার্থক্য থাকে, এই মেয়েটি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঠিক করেনি।” আবার কেউ লিখেছেন, “চিকিৎসা ছাড়া এই মাছের বিষ থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই।”

ডেইলিহান্টের পাঠকদের কাছে আমাদের অনুরোধ, সমুদ্রে বা জলাশয়ে ভ্রমণের সময় অদ্ভুত দর্শন কোনো কিছু স্পর্শ করার আগে সাবধান থাকুন। প্রকৃতিতে অনেক সময় যা পাথর বলে মনে হয়, তা আসলে প্রাণঘাতী স্টোনফিশ হতে পারে।