ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ দখলের হুমকি! আগরতলায় ওপার বাংলার হাই কমিশনের সামনে ধুন্ধুমার!

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সুতো কি তবে ছিঁড়তে বসেছে? ওপার বাংলার এক ছাত্র নেতার বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর-পূর্ব ভারতের সীমান্ত শহর আগরতলা। ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা সাতটি রাজ্য দখল করে নেওয়ার হুমকির প্রতিবাদে শুক্রবার বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনারের অফিসের সামনে আছড়ে পড়ল বিশাল জনস্রোত।
কী ঘটেছিল?
সম্প্রতি বাংলাদেশের এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। অভিযোগ, তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার উসকানিমূলক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়।
আগরতলায় বিক্ষোভের আগুন
শুক্রবার তিপরা মোথা দলের যুব শাখা, ‘ত্রিপুরা ইয়ুথ ফেডারেশন’-এর সদস্যরা আগরতলায় বাংলাদেশের দূতাবাসের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। হাতে তেরঙা জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশি নেতাদের বিরুদ্ধে তীব্র স্লোগান তোলেন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, বিশৃঙ্খলা রুখতে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করতে হয়।
“আমাদের জন্যই আপনাদের জন্ম!”
বিক্ষোভস্থলে দাঁড়িয়ে ত্রিপুরা ইয়ুথ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট সূরজ দেববর্মা কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বলেন:
“বাংলাদেশি নেতারা ভুলে গিয়েছেন যে ভারত সরকার এবং আমাদের সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের কারণেই ১৯৭১ সালে তাঁদের দেশের জন্ম হয়েছিল। আজ সেই দেশ থেকেই আমাদের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে! এটা আমরা কোনোভাবেই সহ্য করব না।”
মুখ খুললেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
হাসনাত আবদুল্লাহর এই ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও। তিনি স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য অবিলম্বে বন্ধ না হলে ভারতও কিন্তু হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।”
কূটনৈতিক পারদ তুঙ্গে
হাসনাত আবদুল্লাহর এই মন্তব্যকে কেবল ব্যক্তিগত মত হিসেবে দেখছে না ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে কড়া কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দুই প্রতিবেশী দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে স্থায়ী ফাটল ধরাতে পারে।
ভারতের অখণ্ডতা নিয়ে এই বিদেশি হুমকির মুখে এখন গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত একাট্টা। দিল্লির তরফে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, এখন সেটাই দেখার।