“অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতেই কি SIR-এর বিরোধিতা?” তাহেরপুরের ভার্চুয়াল সভায় তৃণমূলকে ধুয়ে দিলেন মোদী।

কুয়াশার কারণে হেলিকপ্টার নামতে পারেনি ঠিকই, কিন্তু ফোনের ওপার থেকেই রানাঘাটের রাজনৈতিক উত্তাপ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার তাহেরপুরের সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার কেবল ‘অনুপ্রবেশকারী’দের তোষণে মত্ত। এর ফলে সাধারণ মানুষ তাঁদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

অনুপ্রবেশ ও তোষণ নিয়ে কড়া আক্রমণ প্রধানমন্ত্রী সরাসরি অভিযোগ করেন যে, তৃণমূল সরকার অনুপ্রবেশকারীদের আড়াল করছে। তাঁর ভাষায়:

“বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দেওয়ার কথা, কিন্তু এখানে মোদীকে ‘গো-ব্যাক’ বলা হয়। তৃণমূল অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে মুখে কুলুপ এঁটে থাকে। যারা বাংলাকে দখল করতে চায়, তাদেরই পছন্দ করে তৃণমূল।”

SIR বিরোধিতার নেপথ্য কারণ ভোটার তালিকা যাচাই বা SIR (Special Intensive Revision) নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের আপত্তির কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, ভোটার তালিকায় অনুপ্রবেশকারীদের নাম সুরক্ষিত রাখতেই তৃণমূল এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছে। মোদীর আবেদন— “আমার বিরোধিতা করুন, কিন্তু দয়া করে বাংলার মানুষকে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না।”

বাম আমলের তুলনা ও ত্রিপুরার উদাহরণ বামেদের ৩৪ বছরের অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এলেও রাজ্যের কোনো উন্নতি হয়নি বলে দাবি মোদীর। তিনি বলেন, “তৃণমূল বামেদের সব খারাপ দিকগুলোকে দ্বিগুণ উৎসাহে গ্রহণ করেছে এবং বাংলাকে অধঃপতনের মুখে ঠেলে দিয়েছে।” এই প্রেক্ষিতেই তিনি ত্রিপুরার উন্নয়নের উদাহরণ টানেন। সেখানে বাম শাসনের অবসানের পর বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার কীভাবে কাজ করছে, তা উল্লেখ করে বাংলার মানুষের কাছে একবার সুযোগ চান তিনি।

“ডবল ইঞ্জিন সরকারই একমাত্র পথ” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি, বিজেপিকে একবার সুযোগ দিন। আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার দ্রুততার সাথে বাংলার উন্নয়ন ও বিকাশ করে দেখাবে।”

তাহেরপুরের এই বার্তা বুঝিয়ে দিল, ২০২৬-এর আগে অনুপ্রবেশ এবং ভোটার তালিকা যাচাই ইস্যুকে বিজেপি যে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। সভা বাতিল হলেও মোদীর এই ভার্চুয়াল হুঙ্কার আগামী দিনে বাংলার রাজনীতিতে আরও মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।