“আর কত কাজ চাপাবে কমিশন?” SIR বয়কটের ডাক দিয়ে বিদ্রোহ বিএলও-দের, বিপাকে ভোটার তালিকা সংশোধন!

ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ হওয়ার পরেও কাটছে না জটিলতা। এবার বিএলও (BLO) অ্যাপে নির্বাচন কমিশনের নতুন একটি কারিগরি সংযোজনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে জোরদার বিবাদ। এর প্রতিবাদে আজ থেকেই এসআইআর (SIR) সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ বয়কট করার হুঁশিয়ারি দিল বিএলও অধিকার রক্ষা মঞ্চ। আগামী ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর আবারও মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) দপ্তর অভিযানের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
কী এই নতুন ‘অপশন’? শনিবার সকাল থেকে বিএলও অ্যাপে একটি নতুন বোতাম বা অপশন যুক্ত করা হয়েছে— ‘Re-verify Logical Discrepancies’। এর মাধ্যমে কী করতে হবে?
যুক্তিগত অসঙ্গতি সংশোধন: প্রায় ৩২ লক্ষ ভোটারকে ‘আনম্যাপড’ (যাঁদের পুরনো রেকর্ডের সঙ্গে লিঙ্ক মেলেনি) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এঁদের অনেকেরই নামের বানান ভুল বা বাবার সঙ্গে বয়সের পার্থক্য ১৫ বছরের কম।
বিএলও-দের আন্ডারটেকিং: নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, বিএলও-দের তথ্য যাচাই করে নিশ্চিত করতে হবে যে ওই ভোটাররা ২০০২ সালেও ছিলেন। শুধু তাই নয়, কেন তাঁদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে, তার জন্য বিএলও-দের একটি আন্ডারটেকিং বা লিখিত অঙ্গীকারপত্র দিতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় ভোটারদের আর সরাসরি শুনানিতে (Hearing) ডাকা হবে না।
বিদ্রোহী বিএলও-রা: কেন এই প্রতিবাদ? ভোটকর্মী ও বিএলও ঐক্যমঞ্চের পক্ষ থেকে স্বপন মণ্ডল এবং তনুশ্রী মোদক ভট্টাচার্যরা এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ: ১. কাজের বোঝা: ১১ ডিসেম্বর সব কাজ শেষ করার পরেও কেন প্রতিদিন নতুন নতুন নির্দেশ চাপানো হচ্ছে? ২. দায়ভারের ঝুঁকি: কেন বিএলও-দের আন্ডারটেকিং দিতে হবে? কোনো ভুল হলে তার দায় কি কর্মীদের ওপর চাপানো হবে? ৩. প্রযুক্তিগত বিড়ম্বনা: রোজ অ্যাপ আপডেট করে নতুন অপশনে কাজ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনে চিঠি বিএলও অধিকার রক্ষা মঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়ালকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এই ‘বাড়তি’ কাজ তাঁরা করবেন না। আজ থেকেই কাজ বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খসড়া তালিকায় ইতিমধ্যেই জীবিতদের ‘মৃত’ দেখানো বা বৈধ ভোটারের নাম বাদ পড়ার মতো অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। তার ওপর বিএলও-দের এই কর্মবিরতি ভোটার তালিকা সংশোধনের চূড়ান্ত তালিকায় বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।