ভারতীয় হয়েও ব্রাত্য! SIR তালিকায় নাম নেই বেহালার সুব্রত মিস্ত্রীর, ওদিকে বাংলাদেশি হয়েও ঠাঁই পেলেন ‘অন্য’ সুব্রত।

নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা যাচাই প্রক্রিয়া বা SIR-এর খসড়া তালিকায় এবার ভয়াবহ এক গোলমালের তথ্য সামনে এল। বেহালার বাসিন্দা তথা রাজ্য সরকারি কর্মচারী সুব্রত মিস্ত্রীর নাম তালিকা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। অথচ তাঁরই এপিক (EPIC) নম্বর ব্যবহার করে সোনারপুরের এক ব্যক্তির নাম খসড়া তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে, যিনি নিজে ক্যামেরার সামনে স্বীকার করেছেন যে তাঁর জন্ম বাংলাদেশে।

পুরো ঘটনাটি ঠিক কী? বেহালার সুব্রত মিস্ত্রী দীর্ঘ বছর ধরে ভোট দিচ্ছেন। ২০০২ সালের আগে তাঁর ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছে এবং তিনি নিয়মিত ভোটের ডিউটিও করেন। কিন্তু এবারের SIR খসড়া তালিকায় তিনি দেখেন তাঁর নাম নেই। তদন্তে দেখা যায়:

সুব্রতবাবুর এনুমারেশন ফর্মটি চলে গিয়েছিল সোনারপুরের এক ব্যক্তির কাছে, যাঁর নামও সুব্রত মিস্ত্রী এবং বাবার নামও কাকতালীয়ভাবে এক।

বেহালার সুব্রতবাবুর এপিক নম্বর ব্যবহার করে সেই ফর্ম জমা পড়ে এবং সোনারপুরের সুব্রত মিস্ত্রী তালিকায় স্থান পান।

“দোষটা কার?” প্রশ্ন সুব্রতবাবুর হতাশা ও ক্ষোভ উগরে দিয়ে বেহালার সুব্রত মিস্ত্রী বলেন:

“আমি একজন সরকারি কর্মচারী, প্রতিবার ভোটের ডিউটি করি। অথচ আমিই আজ তালিকার বাইরে! আমার এপিক নম্বর তুলে নিয়ে গিয়ে অন্য সুব্রত মিস্ত্রীর নামে বাবার নাম এক করে কার্ড বানিয়ে দিল কে? এই জবাব নির্বাচন কমিশনকে দিতেই হবে।”

সুব্রতবাবুর বাবা রঞ্জিত মিস্ত্রীও এই ঘটনায় প্রশাসনের তীব্র নিন্দা করেছেন এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

সোনারপুরের সুব্রতবাবুর স্বীকারোক্তি অন্যদিকে, তালিকায় নাম থাকা সোনারপুরের সুব্রত মিস্ত্রী সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, “আমার জন্ম বাংলাদেশে। ছোটবেলায় এখানে চলে এসেছি। ২০১৭ সালে ক্যানিং থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ভিডিও অফিসের মাধ্যমে কার্ড করিয়েছিলাম।” সোনারপুর উত্তরের বিএলও সমীরণ রায়ের দাবি, ফর্মে যা ছিল তিনি সেটুকুই করেছেন।

এই ঘটনা এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল। কীভাবে একজন ভারতীয় নাগরিকের নথি ব্যবহার করে অন্য একজন (যিনি ভিনদেশের নাগরিকত্ব স্বীকার করছেন) তালিকায় নাম তুলছেন, তা নিয়ে এখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।