“বিদেশি অস্ত্রের দিন শেষ!” ১ লক্ষ দেশীয় পিস্তল কিনছে ভারতীয় সেনাবাহিনী, যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর যম হবে এই ‘মডুলার’ অস্ত্র।

আধুনিক রণক্ষেত্রে জওয়ানদের সুরক্ষা ও সক্ষমতা বাড়াতে এক বড় পদক্ষেপ নিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। বিদেশি অস্ত্রের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এবার সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ১ লক্ষ অত্যাধুনিক ৯ মিমি পিস্তল অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পদাতিক সৈন্য থেকে শুরু করে কমান্ডিং অফিসার— সবার হাতেই পৌঁছে যাবে এই নয়া প্রজন্মের মরণাস্ত্র।
সেনাবাহিনীর কেন এই পিস্তল প্রয়োজন? ঘনিষ্ঠ যুদ্ধ (Close Quarter Battle), সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযান এবং শহরের ভেতরে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে পিস্তল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্যাকআপ’ বা গৌণ অস্ত্র হিসেবে কাজ করে। জঙ্গল বা ঘিঞ্জি এলাকায় যেখানে বড় রাইফেল চালানো কঠিন, সেখানে এই ৯ মিমি পিস্তলই জওয়ানদের শেষ রক্ষা করে।
কঠিন পরীক্ষায় পাস করতে হবে এই অস্ত্রকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জারি করা তথ্য অনুরোধ (RFI) অনুযায়ী, এই পিস্তলকে ভারতের বৈচিত্র্যময় ভূখণ্ডে কার্যকর হতে হবে:
চরম আবহাওয়া: মাইনাস ৩০ ডিগ্রি থেকে প্লাস ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এটি নির্ভুলভাবে কাজ করতে হবে।
ভৌগোলিক অবস্থান: থর মরুভূমির তপ্ত বালু থেকে শুরু করে হিমালয়ের ১৮,০০০ ফুট উচ্চতার অক্সিজেনহীন পাহাড়েও এর সক্রিয়তা বজায় থাকতে হবে।
মডুলার ডিজাইন ও আধুনিক সুবিধা সেনাবাহিনী এমন এক পিস্তল চাইছে যা ভবিষ্যতে প্রয়োজন অনুযায়ী আপগ্রেড করা যাবে। এতে থাকবে:
অ্যাড-অন সুবিধা: রেড ডট সাইট, লেজার নির্দেশিকা এবং সাইলেন্সর (সাপ্রেসর) লাগানোর ব্যবস্থা।
দীর্ঘস্থায়িত্ব: ব্যারেলের দীর্ঘ জীবন, জং ধরা প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জলে ভিজে গেলেও অনায়াসে গুলি চালানোর ক্ষমতা।
আত্মনির্ভর ভারত ও মেক ইন ইন্ডিয়া এই প্রকল্পের অধীনে কোম্পানিগুলিকে কেবল অস্ত্র সরবরাহ করলেই হবে না, বরং ভারতে সেই প্রযুক্তির সম্পূর্ণ লাইসেন্স এবং দেশীয়করণের রোডম্যাপও জমা দিতে হবে। এর ফলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি বিশ্বমানের অস্ত্র তৈরির সুযোগ পাবে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বছরের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত টেন্ডার বা RFP জারি করা হতে পারে। এই পদক্ষেপ সফল হলে ভারতীয় সেনার পদাতিক বাহিনী আরও শক্তিশালী ও আধুনিক হয়ে উঠবে, যা বিদেশের ওপর ভারতের নির্ভরতা এক ধাক্কায় অনেকটাই কমিয়ে দেবে।