সুন্দরবনে খাবারের হাহাকার! জঙ্গল ছেড়ে দোকানে হানা হনুমানের দলের, চিপস-কুরকুটে মজল ‘বজরংবলি’

সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে খাদ্যের চরম সংকট। আর সেই খিদের জ্বালায় এবার লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হনুমানের দল। উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন সংলগ্ন হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি এবং মিনাখাঁর গ্রামগুলোতে এখন এক অদ্ভুত দৃশ্য চোখে পড়ছে। বন্যপ্রাণের স্বাভাবিক বাসস্থান ছেড়ে হনুমানরা এখন মুদিখানা দোকান বা গেরস্থালির রান্নাঘরে রাজত্ব করছে।

তাণ্ডব না কি পেটের টান? গত এক সপ্তাহ ধরে এলাকাগুলোতে হনুমানদের দাপট বেড়েছে চরমে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ:

দোকানে হানা: কাউন্টার টপ বা কাচের শোকেসের ওপর জাঁকিয়ে বসে লেজ দুলিয়ে আলুর চিপস বা কুরকুরে খাচ্ছে তারা।

বোয়াম খুলে ভোজ: দোকানের ভেতরে ঢুকে দিব্যি বিস্কুট বা চানাচুরের কৌটো খুলে বেঞ্চে বসে ভোজ সারছে হনুমানরা।

আতঙ্কে গ্রাম: হনুমানদের এই আগ্রাসী মেজাজে শিশুরা রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছে। কাউকে দেখলে তাড়া করা বা সরাসরি ঘরে ঢুকে পড়ার ঘটনায় অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা।

কেন এই পরিস্থিতি? পরিবেশবিদদের মতে, এই সংকটের মূলে রয়েছে মানুষেরই হস্তক্ষেপ। পরিবেশবিদ রঞ্জিত মুখার্জির দাবি: ১. নির্বিচারে গাছ কাটা: সুন্দরবন এলাকায় যথেচ্ছ জঙ্গল সাফ করার ফলে বন্য হনুমানদের প্রধান খাদ্য ‘বুনো ফল’ দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে। ২. প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট: জঙ্গলে খাবার না পেয়েই অস্তিত্ব রক্ষায় তারা লোকালয়ে খাবারের সন্ধানে আসছে। তাঁদের মতে, বনের রাজাদের অবস্থা এখন কার্যত ‘ভিখারির’ মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গ্রামবাসীদের দাবি, বন দফতর দ্রুত কোনো ব্যবস্থা না নিলে শুধু সম্পদ নষ্ট নয়, যেকোনো সময় মানুষ ও বন্যপ্রাণের মধ্যে বড় ধরণের সংঘাত ঘটে যেতে পারে।