নীতীশ কুমারের ‘কীর্তি’তে তোলপাড় দেশ! অপমানে সরকারি চাকরিই ছেড়ে দিচ্ছেন মুসলিম চিকিৎসক?

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের একটি ভিডিও ঘিরে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওর কেন্দ্রে থাকা আয়ুষ চিকিৎসক নুসরত পরভিন এবার নিতে চলেছেন এক কঠিন সিদ্ধান্ত। জানা গেছে, যে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র নিতে গিয়ে চরম অস্বস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে, সেই বহু প্রতীক্ষিত চাকরিতে হয়তো আর যোগই দেবেন না তিনি।
পরিবারের উদ্বেগ ও নুসরতের সিদ্ধান্ত: নুসরতের দাদা, যিনি পেশায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক, একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে তাঁর বোন এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। আগামী ২০ ডিসেম্বর তাঁর পোস্টিংয়ে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও নুসরত এখন বেঁকে বসেছেন। তাঁর বক্তব্য, “ও জেদ ধরেছে যে এই চাকরিতে ও আর যোগ দেবে না। আমরা সবাই ওকে বোঝাচ্ছি যে অপরাধ অন্য কেউ করেছে, তার সাজা ও কেন নিজেকে দেবে? কিন্তু ও ভীষণ ব্যথিত।”
ঠিক কী ঘটেছিল সেই অনুষ্ঠানে? সম্প্রতি বিহারে আয়ুষ চিকিৎসকদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার একটি সরকারি অনুষ্ঠান ছিল। অভিযোগ উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার যখন নুসরতকে নিয়োগপত্র দিচ্ছিলেন, তখন আচমকাই তাঁর মাথার হিজাব সরিয়ে মুখ দেখার চেষ্টা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে (যার সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদমাধ্যম) দেখা যায়, পাশে থাকা উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
রাজনৈতিক চাপানউতোর: এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নীতীশ কুমারের মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী জামা খান বিষয়টিকে সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর দাবি, “নীতীশজি এক মুসলিম কন্যার প্রতি পিতৃসুলভ ভালোবাসা দেখিয়েছেন। তিনি চেয়েছিলেন এই সফল কন্যার মুখ বিশ্ববাসী দেখুক।”
বিতর্কে নীতীশের অতীত: নীতীশ কুমারের এই আচরণ ঘিরে বিতর্ক নতুন নয়। এর আগেও জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন হাততালি দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। এবার এক মহিলা চিকিৎসকের ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রীতিমতো কোণঠাসা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
এখন প্রশ্ন উঠছে, একজন মেধাবী চিকিৎসক কি রাজনীতির এই নোংরা লড়াই আর অপমানের জেরে নিজের কেরিয়ার বিসর্জন দেবেন?