আক্রান্ত বিজেপি সাংসদকে দেখতে হাসপাতালে মমতা! শিলিগুড়ি থেকে ফেরার পথে দিলেন রাজনৈতিক হামলার জবাব

উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিজনিত দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালের ICU-তে ভর্তি রয়েছেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। মঙ্গলবার মিরিক থেকে ফিরেই হঠাৎ সেই আক্রান্ত সাংসদকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই হাসপাতালে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও ভর্তি থাকলেও, মুখ্যমন্ত্রী শুধু খগেন মুর্মুর সঙ্গেই দেখা করেন।

‘গুরুতর নয়, দ্রুত সেরে উঠুন’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি খবর পেয়েই আহত সাংসদকে দেখতে এসেছেন। সাংসদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি শুনেছি উনি আহত হয়েছেন, তাই দেখতে এসেছি। ওঁর ডায়াবেটিকটা অনেকটাই বেশি আছে। কানের ওখানে একটু লেগেছে। বাকি সব ঠিক আছে। ডাক্তারদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার মতো গুরুতর কিছু হয়নি। এখন স্থিতিশীল আছেন। উনি দ্রুত সেরে উঠুন এটাই বলে এলাম।”

হাসপাতাল সূত্র অনুযায়ী, বিজেপি সাংসদের চোখের নীচে আঘাত গুরুতর এবং তাঁর অস্ত্রোপচার হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন চিকিৎসকরা।

ভিআইপি কনভয় নিয়ে কড়া বার্তা
বিজেপি সাংসদের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর জবাব দেন। তাঁর মন্তব্যে ভিআইপি-দের বড় কনভয় নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা এবং তার ফলস্বরূপ মানুষের ক্ষোভের বিষয়টি উঠে আসে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভিআইপি-র নামে বড় কনভয় নিয়ে ঢুকছে, রাস্তা ভেঙে দিয়ে চলে যাচ্ছে। রাস্তা দিয়ে ৪০টি গাড়ির কনভয় নিয়ে যাই, তাহলে পাহাড়ের উপর প্রেসার পড়ে। তিনটির বেশি গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না, নির্দেশ আছে।”

তিনি আরও বলেন, “সব হারিয়ে মানুষের ক্ষোভ জন্মায়। রাস্তা নেই, যোগাযোগ নেই, তখন মানুষ অসহায়তায় ভোগে। সেইজন্য সেই সময় মাথা ঠান্ডা রেখে অবস্থা সামাল দিতে হয়, সমস্যা বুঝতে হয়।”

শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ
এদিকে, এই হামলার ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি নিশানা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ লেখেন, “এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও যদি সাংসদ-বিধায়করা সুরক্ষিত না থাকেন, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী হতে পারে? মুখ্যমন্ত্রী বলুন, এরা কারা? গুন্ডা তৃণমূলের। এদেরকে দিয়ে সব জায়গায় এসব করায়।”

অন্যদিকে, মঙ্গলবার বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ককে দেখতে একই হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও।