‘ওলা কিনুন আর জীবনভর অনুশোচনা করুন!’ স্কুটার সারানোর দীর্ঘসূত্রিতায় ক্ষোভে ফুঁসছে গ্রাহকরা, ভাইরাল হাতাহাতির ভিডিও

ওলা ইলেকট্রিকের (Ola Electric) পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগের পাহাড় বছর ধরে বাড়তে থাকলেও, পরিস্থিতি বদলায়নি। স্কুটার সারানোর ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা এবং অমীমাংসিত অভিযোগের জেরে এবার দেশজুড়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বহু গ্রাহক। সম্প্রতি এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ওলার পরিষেবা কেন্দ্রে ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের উষ্মা প্রকাশ করতে এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে।
‘ওলা কিনুন আর জীবনভর অনুশোচনা করুন’
ভাইরাল ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “ওলা কিনুন আর জীবনভর অনুশোচনা করুন। আমার বাড়ির কাছেই ওলার শোরুম, কিন্তু একজনও সন্তুষ্ট গ্রাহক দেখিনি। প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু সমস্যা রয়েছে!”
ভিডিওতে এক গ্রাহককে পরিষেবা কেন্দ্রের এক আধিকারিকের সঙ্গে রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। অন্য গ্রাহকদের ক্ষুব্ধ মন্তব্য ছিল:
“আমি শুধু একবার গাড়িতে সামান্য একটি কাজ করতে বলেছিলাম, আর তার জন্য গাড়িটা চার মাস ধরে পড়ে ছিল।”
“পরিষেবা দিতে না পারলে শোরুম বন্ধ করে দিন না!”
‘জীবনে যতই ভুল করুন, ওলা কিনবেন না’
সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট বক্সেও ব্যবহারকারীরা তাঁদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। এক হতাশ ক্রেতা লিখেছেন, “গত এক বছর ধরে ওলার জন্য হেনস্থার শিকার হচ্ছি। এখন সমস্ত আশা হারিয়ে ফেলেছি। কেউ জিজ্ঞাসা করলে একটাই কথা বলি, জীবনে যতই ভুল করুন, কিন্তু কখনও ওলা কিনবেন না।”
অন্যদিকে, এক গ্রাহক সরাসরি ওলার সিইও ভাবিশ আগরওয়ালকে ট্যাগ করে লিখেছেন: “এটা দুঃখজনক যে গ্রাহকদের হতাশা দেখেও ওলা ইলেকট্রিকের টনক নড়ছে না। আমার স্কুটারটি দু’মাস ধরে সারানোর জন্য পড়ে আছে। ভাবিশ আগরওয়াল, এটা কি পরিষেবার চরম ব্যর্থতা নয়?”
আরেকজন অভিযোগ করেন, “প্রথমত, এদের সামগ্রী জঘন্য। কেনার এক মাসের মধ্যেই মোটর খারাপ হয়ে গেল, এখন অ্যাক্সিলারেটরের সমস্যা।”
৫৮% বাজার দখল হারাল সংস্থা, শুরু হয়েছে তদন্ত
এই লাগাতার অভিযোগ এবং পরিষেবার সমস্যা সংস্থার বাজার দখলেও সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। খবর অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে যেখানে ওলার বাজার দখল ছিল ৩৮.৮৩ শতাংশ, তা ২০২৫ সালের জুলাইয়ে এক ধাক্কায় কমে দাঁড়িয়েছে ১৭.৩৫ শতাংশে। অর্থাৎ, বার্ষিক হিসাবে তাদের বাজার দখল ৫৭ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে, এই অভিযোগের আবহেই কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (CCPA) ওলা ইলেকট্রিকের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এক বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে, ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর সংস্থাকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিসও পাঠানো হয়েছিল। ওলার পক্ষ থেকে অভিযোগ সমাধানের দাবি করা হলেও, সিসিপিএ-এর পর্যালোচনায় সেই তথ্যে গরমিল মেলায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।