আধুনিকতা ও সামাজিক বার্তা, হুগলির চুঁচুড়ায় লোহার ফ্লাইওভারের থিমে প্রান্তিক মানুষের কথা

হুগলি জেলাজুড়ে বরাবরই নিজেদের অনন্য থিম ভাবনার জন্য পরিচিত চুঁচুড়ার পঞ্চাননতলা দুর্গাপূজা কমিটি। এবার তাঁদের ৩২তম বর্ষে একটি অভিনব এবং চোখধাঁধানো থিম নিয়ে হাজির হচ্ছেন তাঁরা— মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ লোহার ফ্লাইওভারের আদলে।

এই বছর তাঁদের ভাবনা, ‘নীড় ছোট ক্ষতি নেই, আকাশ তো বড়’। এই ভাবনাকে কেন্দ্র করেই আধুনিক লোহার কাঠামো ব্যবহার করে ফ্লাইওভার তৈরি করা হচ্ছে, যা তাদের যাত্রাপথে এক নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে।

ফ্লাইওভারের নীচে বাস্তবের প্রতিচ্ছবি
পুজোর থিমে আধুনিকতার ছোঁয়া থাকলেও, এর মাধ্যমে একটি গভীর সামাজিক বার্তা তুলে ধরা হচ্ছে।

শিল্পীর ভাবনা: মণ্ডপসজ্জার শিল্পী জানান, ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কাঠ, প্লাই এবং সম্পূর্ণ লোহার ফ্রেম দিয়ে তৈরি এই সজ্জায় মানুষের নিরাপত্তার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সামাজিক বার্তা: শিল্পীর কথায়, “আজকের ব্যস্ত জীবনে আমরা অনেক সময় নিচুতলার মানুষদের কথা ভাবতে ভুলে যাই। আমাদের এই মণ্ডপ সেই বাস্তবতাকে দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরবে। বিশেষ করে শিশু ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের কথা ভেবে আমরা এই ভাবনাকে প্রকাশ করছি।”

কমিটির লক্ষ্য: কমিটির সদস্য অসমঞ্জ চট্টোপাধ্যায় জানান, সমাজে বসবাসকারী দরিদ্র মানুষের কাছে ছোট ছোট বার্তা পৌঁছে দেওয়াই তাঁদের মূল লক্ষ্য।

প্রতিমাতেও আধুনিকতা, বাজেট ১৮ লক্ষ টাকা
পঞ্চাননতলা দুর্গাপূজা কমিটির এবারের দুর্গোৎসবের বাজেট ধরা হয়েছে আনুমানিক ১৮ লক্ষ টাকা। প্রতিমার মধ্যেও থাকছে আধুনিকতার ছোঁয়া। বিশিষ্ট ভাস্কর শিল্পী সৈকত বসু প্রতিমা নির্মাণ করছেন, যা দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই মণ্ডপ চতুর্থী থেকেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সামগ্রিকভাবে, এই বছরের থিমে যেমন অভিনবত্বের ছোঁয়া রয়েছে, তেমনই সামাজিক বার্তাও স্পষ্ট। হুগলি জেলার এই পুজো এবার দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।