‘সেভেন সিস্টার্স ল্যান্ডলকড’, সাগর ভাগ করে নিতে পারি! ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে বিস্ফোরক ড. ইউনুস

ভারত ও বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ক নিয়ে অকপটে মুখ খুললেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, ভারত থেকে বাংলাদেশ নিয়ে ‘মিথ্যা প্রচার’ চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি করতে ‘মিনি সার্ক’ গঠনের বা সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন।

ইউনুস স্বীকার করেন, এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের এখন ভারতের সঙ্গে সমস্যা আছে। কারণ তারা (ভারত) পড়ুয়াদের বিপ্লবকে ভালো চোখে দেখেনি। এই সমস্যা তৈরি করা হাসিনাকে তারা আশ্রয় দিচ্ছে। এই কারণে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে।”

ইউনুস এদিন আবারও ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যকে ‘ল্যান্ডলকড’ বা স্থলবেষ্টিত অঞ্চল বলে আখ্যা দেন। তবে এই ইস্যুতে তাঁর সুর কিছুটা নরম ছিল। এর আগে তিনি চিনে বসে বাংলাদেশকে বঙ্গোপসাগরের অভিভাবক বা ‘গার্ডিয়ান’ আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ তিনি মিলেমিশে সাগর ভাগ করে নেওয়ার কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি আমাদের সীমান্তের মধ্যে আবদ্ধ। কিন্তু এটা কেন হবে? আমরা কেন নেপাল, ভুটান, ভারতের সেভেন সিস্টার্সের দিকে তাকাব না? তাদের কাছে সমুদ্রে যাওয়ার কোনও পথ নেই। ওটা ল্যান্ডলকড অঞ্চল। বঙ্গোপসাগর এখানেই আছে। আমরা সবাই ভাগ করে নিতে পারি বঙ্গোপসাগর। তাহলে তারা বাকি বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।” তাঁর মতে, এতে দুই পক্ষই লাভবান হবে।

মহম্মদ ইউনুস সার্ক পুনরুজ্জীবনের দাবি জানিয়ে বলেন, সার্ক সক্রিয় না হলেও আমরা ‘মিনি সার্ক’ গঠন করতে পারি। তিনি শুধুমাত্র বাণিজ্যিক চুক্তি করার পরামর্শ দেন, যেখানে রাজনীতি আনার দরকার নেই।

তিনি দাবি করেন, সার্কের দেশগুলির মধ্যে যেন ভিসা ছাড়াই নাগরিকদের যাতায়াত করতে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “ভাবুন, যদি আমাদের সার্কের সংগঠন ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো হত। আমরা পাসপোর্ট থাকলেই ভিসা ছাড়াই একে অপরের দেশে যেতে পারতাম। এক দেশের মানুষ অন্য দেশে বসবাস করতে পারত। সেখানে ব্যবসা করতে পারত। এটা কী দুর্দান্ত আইডিয়া ছিল।”

ইউনুস অভিযোগ করেন, “ওপার (ভারত) থেকে অনেক ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে আমাদের এখানে ইসলামপন্থী আন্দোলন হয়েছে।” তাঁর এই মন্তব্য ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থাকে আরও একবার স্পষ্ট করল।