বিহার নির্বাচনে জনমোহিনী চাল, ইবিসি-দের জন্য বিশেষ আইন ও ৩০% সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি রাহুলের, চাপে নীতীশ কুমার

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর আগে ভোটারদের মন জয় করতে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার যখন একের পর এক জনমোহিনী ঘোষণা করছেন, ঠিক তখনই বিরোধী ইন্ডিয়া (INDIA) শিবির সুকৌশলে তাঁর ভোটব্যাঙ্কে আঘাত হানার চেষ্টা করল। বুধবার পাটনায় কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটির বৈঠক থেকে অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণি (EBC)-র জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন এবং সংরক্ষণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি।

ইবিসি-দের জন্য বিশেষ আইন ও ১০ সঙ্কল্প
পটনার অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবদের পাশে নিয়ে রাহুল গান্ধি ইবিসিদের জন্য দশটি সঙ্কল্প ঘোষণা করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘোষণাটি হলো:

বিশেষ আইন: ইবিসিদের জন্য একটি বিশেষ আইন তৈরি করা হবে, যা তফশিলি জাতি (SC) ও উপজাতি (ST) আইনের মতো হবে। এর ফলে এই শ্রেণির মানুষজনের সামাজিক সুরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।

সংরক্ষণ বৃদ্ধি: ইবিসিদের জন্য বর্তমানে থাকা সংরক্ষণ ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হবে।

এছাড়াও, ইন্ডিয়া শিবির ঘোষণা করেছে যে এসসি, এসটি, ওবিসি এবং ইবিসিদের জন্য মোট সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নীতীশের ভোটব্যাঙ্কে কৌশলী আঘাত
বিহারের রাজনীতিতে জাতিগত সমীকরণ সবসময়ই নির্ণায়ক ভূমিকা নেয়। জনসংখ্যার প্রায় ৩৬ শতাংশ হওয়ায় ইবিসিরা প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই লক্ষ্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইবিসিদের মধ্যে নীতীশ কুমারের গ্রহণযোগ্যতা বাকিদের তুলনায় কিছুটা হলেও বেশি, যা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপত্তির মূল চালিকাশক্তি। সেখানেই এবার কৌশলে আঘাত হানার চেষ্টা করল বিরোধীরা।

একসময় লালু প্রসাদ যাদবের সঙ্গে ছাত্র আন্দোলন শুরু করেও জাতিগত সমীকরণের প্রশ্নেই তাঁদের রাজনৈতিক বিরোধিতার সূত্রপাত। যাদবদের নেতা লালু কেবল যাদবদের উন্নয়নে মগ্ন বলে দাবি করে, নীতীশ কুমার কুড়মি-সহ অন্যান্য পিছিয়ে পড়া এবং অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণির স্বর হয়ে উঠেছিলেন। এবার কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা ইবিসিদের মন পেতে এই বড় প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় নীতীশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সমীকরণে বড়সড় চাপ তৈরি হলো।