নেপালে গণবিক্ষোভ, ভারতের উপর কি প্রভাব পড়বে? সীমান্তে সতর্কতা জারি, বিশেষজ্ঞেরা কী বলছেন?

দুর্নীতি ও বেকারত্বের আগুনে ধিকিধিকি জ্বলছিল নেপাল। সম্প্রতি সরকারের সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা সেই আগুনে যেন ঘি ঢেলে দিয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে লক্ষাধিক পড়ুয়া রাজপথে নেমে এসে গণ-আন্দোলন শুরু করেছে। এই বিক্ষোভের জেরে ইতিমধ্যেই ২১ জনের মৃত্যু এবং ২৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পর এবার নেপালেও বিদ্রোহের ঢেউ আছড়ে পড়ায় ভারতেও তার প্রভাব নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপালের এই উত্তাল পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি সতর্ক হয়েছে। কারণ, পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলি ভারত ও নেপালের মধ্যে কাঁটাতারবিহীন উন্মুক্ত সীমান্তকে প্রায়শই ভারতে অনুপ্রবেশের কাজে ব্যবহার করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নেপালের এই অস্থির পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরা ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে।
সশস্ত্র সীমা বল (SSB) ভারত-নেপাল সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে এবং পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্তা ব্রিগেডিয়ার প্রণব ঘোষের মতে, “নেপালের এই বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে বিগত কয়েক বছরের প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং বেকারত্ব। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ রোজগার করতেন, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা সেই ক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে।”
ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৪৭ সালে দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী চুক্তি হলেও, বিভিন্ন সময়ে নেপালের সরকার ভারতপন্থী নাকি চিনপন্থী, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। চিন বিপুল ঋণ ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে নেপালকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারত ও নেপালের মধ্যে দেড় হাজার কিলোমিটারের বেশি উন্মুক্ত সীমান্ত রয়েছে এবং দুই দেশের নাগরিকদের যাতায়াতের জন্য কোনো পাসপোর্ট বা ভিসার প্রয়োজন হয় না। তাই এই উত্তাল পরিস্থিতিতে নেপালের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির দিকে ভারত নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।