বাংলাদেশে হিন্দুরা মুছে যাওয়ার পথে? জেনেনিন বর্তমান পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক?

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দেশটিতে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতন বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একদা নিষিদ্ধ কট্টরপন্থী সংগঠন জামাত-ই-ইসলামি-র কার্যকলাপও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সে দেশের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ।
সম্প্রতি মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডিআই (HRDI) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পঙ্কজ নাথ বলেন, “পরিস্থিতি ভীষণ উদ্বেগজনক। গত এক বছরে খুন, ধর্ষণ, জমি দখল, হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার ঘটনা তিন হাজারেরও বেশি। বাংলাদেশ এখন এমন এক মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখান থেকে সে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকেও যেতে পারে, আবার এমন পথেও হাঁটতে পারে যা শেষ পর্যন্ত ধর্মীয় বিভাজন ও সংস্কৃতির বিলোপ ডেকে আনবে।”
হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ
পঙ্কজ নাথ অভিযোগ করেন, বিএনপি এবং জামাত-এর মতো কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলো সরকারের ছত্রছায়ায় এসব হামলা চালাচ্ছে। তার মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব ঘটনায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। অনলাইনে মিথ্যা খবর ছড়িয়ে দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “হিন্দুরা রাজনৈতিকভাবে প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে। সংসদে ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রতিনিধিত্ব খুবই কম।”
পঙ্কজ নাথের বক্তব্যে আরও স্পষ্ট হয়েছে যে, হিন্দুরা বাংলাদেশে এখন ‘অস্তিত্বের সংকটে’ ভুগছে। তিনি বলেন, “হিন্দুরা এই দেশে অবশ্যই ঝুঁকিতে আছে। প্রশ্ন হলো, কত দ্রুত বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘুরা মুছে যাবে?”
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার প্রবীর সরকারও একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বৈষম্য চলছে। ২০০৯ সালের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫০ জন সংখ্যালঘু শিক্ষক ছিলেন, কিন্তু ২০২৪ সালের আগস্টের পর থেকে শত শত শিক্ষক চাপে পড়ে পদত্যাগ করেছেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা এখন আর কোনো মানবাধিকার ইস্যু নয়, বরং এটি অস্তিত্বের লড়াই। বাংলাদেশের হিন্দুরা প্রায় বিলুপ্তির পথে।” এইচআরডিআই-এর মহাসচিব রাজেশ গোগনা বলেন, “প্রতিটি সহিংস ঘটনার পর হিন্দুরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। মন্দির ভাঙচুরের সময় পুলিশ চুপ থাকে, যা প্রমাণ করে যে তাদের নীরব সমর্থন আছে।”