তুরস্ককে শিক্ষা দিতে অভিনব পন্থা ভারতের, পর্যটন থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক লোকসান আঙ্কারার

কাশ্মীরের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা থেকে শুরু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’—ভারতের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান সরকারের পাকিস্তানপন্থী অবস্থানকে এবার বয়কটের মাধ্যমে জবাব দিচ্ছে ভারতের সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এর ফলে পর্যটন ও শিক্ষাক্ষেত্রে আঙ্কারা কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পর্যটন শিল্পের ওপর এর প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। কম খরচে ইউরোপের ছোঁয়া পেতে ভারতীয় পর্যটকদের মধ্যে তুরস্কের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে তুরস্কের ক্রমাগত বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের পর হাজার হাজার ভারতীয় পর্যটক তাদের তুরস্ক সফরের পরিকল্পনা বাতিল করছেন। একটি পরিসংখ্যান থেকে এই প্রবণতা স্পষ্ট হয়। ২০২৪ সালের জুন মাসে যেখানে ৩৮ হাজারেরও বেশি ভারতীয় পর্যটক তুরস্ক ভ্রমণ করেছিলেন, সেখানে ২০২৫ সালের জুন মাসে এই সংখ্যা প্রায় ৩৭ শতাংশ কমে ২৪ হাজারে নেমে এসেছে। কলকাতার মতো শুধুমাত্র একটি শহর থেকেই আসন্ন পুজোয় তুরস্ক ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন প্রায় ১,৫০০ জন, যা থেকে ৬০-৭০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন পর্যটন সংস্থাগুলোও ‘বয়কট তুরস্ক’ প্রচারে অংশ নিচ্ছে।
প্রখ্যাত ব্যবসায়ী হর্ষ গোয়েঙ্কাও সামাজিক মাধ্যমে তুর্কি পণ্য ও পরিষেবা বয়কটের এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে বলেছেন যে, এর মাধ্যমে তুরস্কের অর্থনীতিকে বড়সড় ধাক্কা দেওয়া সম্ভব।
পর্যটন ছাড়াও শিক্ষাক্ষেত্রেও এরদোগান সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া এবং জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে তাদের সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। একই পথে হেঁটেছে আইআইটি রুরকি এবং আইআইটি বোম্বের মতো স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ও তুরস্কের মধ্যে কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যদি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তুরস্কের লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।