ভোটে কারচুপি? ‘ডিক্লারেশন’ চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের, রাহুল গান্ধীও নাছোড় বান্দা

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে লক্ষাধিক ভোট চুরির অভিযোগ তুলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী যে বোমা ফাটিয়েছিলেন, তা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি যে প্রমাণাদি পেশ করেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় এবার কড়া অবস্থান নিয়েছে কমিশন। সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধীকে দুটি বিকল্প দেওয়া হয়েছে: হয় তিনি তার অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ দিয়ে একটি ডিক্লারেশনে সই করুন, নতুবা দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান।

রাহুল গান্ধীর এই বিস্ফোরক অভিযোগের পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে উত্তাপ বেড়েছে। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও বেঙ্গালুরুর একটি জনসভায় রাহুল গান্ধী নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। তিনি বলেন, ‘এই ভোট চুরি ভারতীয় সংবিধানের অসম্মান। আমাদের সংবিধান প্রতিটি নাগরিককে ভোটাধিকার দিয়েছে, যা এখন দেশের এজেন্সিগুলির মাধ্যমে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সময় বদলাবেই, তখন সমস্ত অপরাধের শাস্তি মিলবে।’

কমিশনের পক্ষ থেকে যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে, তার জবাবও এদিন দেন কংগ্রেস সাংসদ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমার কাছে হলফনামা চেয়েছে। আমি সংসদের ভেতরে সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছিলাম। এখন দেশের মানুষ যখন ভোট চুরির তথ্য নিয়ে জবাব চাইছে, তখন কমিশন নিজেদের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিচ্ছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, রাজস্থান এবং বিহারে কমিশন তাদের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ তারা বুঝে গেছে এবার তাদের পর্দা ফাঁস হয়ে যাবে।

রাহুল গান্ধী আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি, কমিশন আগে ইলেকট্রনিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করুক। আমি প্রমাণ করে দিয়েছি দেশে ভোট চুরি হয়েছে। কমিশন যদি ইলেকট্রনিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করে, তবে আমরা প্রমাণ করে দেব যে প্রধানমন্ত্রী ভোট চুরি করেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।’

কংগ্রেস নেতার এই অভিযোগের তীব্রতা এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া কড়া চ্যালেঞ্জ, দুই মিলিয়ে এই বিতর্ক এখন নতুন মোড় নিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে, এবং এর সমাধান না হলে তা ভবিষ্যতে আরও বড় বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। এখন দেখার, রাহুল গান্ধী কমিশনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ডিক্লারেশন সই করেন, নাকি এই বিতর্কের জল অন্য দিকে গড়ায়।