বারুইপুরে ভয়াবহ ঘটনা, বৃদ্ধাকে ধর্ষণের পর চুরি, অভিযুক্ত গ্রেফতার

বারুইপুর শহরতলীতে এক জঘন্য অপরাধের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। চুরি করতে এসে এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগে রোহাব শেখ (নাম পরিবর্তিত) নামের এক ব্যক্তিকে পিয়ালী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে শুধু এই ঘটনা নয়, একাধিক চুরি এবং জেলার বাইরেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, কলকাতা শহরে লাগামহীনভাবে বেড়ে চলা সাইবার প্রতারণার ঘটনায় নতুন করে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী।
বারুইপুরের লোমহর্ষক ঘটনা
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার রাতে (২৬শে জুলাই, ২০২৫) বারুইপুরের এক বৃদ্ধার বাড়িতে চুরির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে অভিযুক্ত রোহাব শেখ। অভিযোগ, চুরির পাশাপাশি সে বৃদ্ধাকে ধর্ষণও করে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর পরই নির্যাতিতা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে বারুইপুর থানার স্পেশাল অপারেশন টিমের সদস্যরা দ্রুত তদন্তে নামে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে এবং অভিযুক্তের হাতে থাকা একটি নির্দিষ্ট বালার সূত্র ধরে তাকে চিহ্নিত করা হয়। আজ, সোমবার (২৮শে জুলাই, ২০২৫) রোহাব শেখকে গ্রেফতার করে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত বারুইপুর থানার অন্তর্গত আরও বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
বারুইপুর স্পেশাল অপারেশন টিম গত ১০ দিনে মোট ৩০ জন চোরকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে চারটি চুরির ঘটনায় খোয়া যাওয়া জিনিসপত্রও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে চুরি করতে এসে ধর্ষণের মতো ঘটনা বারুইপুরবাসীর মনে গভীর আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এবং শহরতলীতে পুলিশের টহলদারি ও নজরদারি আরও বাড়ানোর আবেদন করেছেন।
কলকাতায় সাইবার প্রতারণার নতুন চক্র ফাঁস
অন্যদিকে, আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার করে সাইবার প্রতারকরা সাধারণ মানুষের সর্বনাশ ঘটিয়ে চলেছে। এমন একটি ঘটনায় কলকাতা পুলিশের পোর্ট ডিভিশনের সাইবার সেল ও গার্ডেনরিচ থানার যৌথ তদন্তকারী দল বড়সড় সাফল্য পেয়েছে। একটি সাইবার প্রতারণার মামলায় (কেস নম্বর ১৯৭, তারিখ ১৮.০৭.২০২৫) চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী।
পুলিশ সূত্রে খবর, গার্ডেনরিচের আলিফ নগরের বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী সন্দীপ কুমার আগরওয়াল গত ১১ই জুলাই একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, অজ্ঞাতপরিচয় কিছু ব্যক্তি অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং তাতে একটি গ্রাহক পরিষেবা নম্বর (৬২৮৭২০৯২৩৬) দিয়ে রাখে। ওই নম্বরে ফোন করার পর একজন ব্যক্তি নিজেকে ব্যাঙ্কের শাখা ব্যবস্থাপক পরিচয় দিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্ক পাঠান। অভিযোগকারী সেই লিঙ্কে ক্লিক করতেই তার মোবাইল ফোন হ্যাক হয়ে যায়। এর পরপরই ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, বরাতলা শাখায় থাকা তার ক্রেডিট অ্যাকাউন্ট থেকে ₹১,১৮,৪১০ টাকা একাধিক লেনদেনের মাধ্যমে তুলে নেওয়া হয়। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ চক্রটির সন্ধান পায় এবং চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
বারুইপুর এবং কলকাতার এই দুটি ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সাইবার সুরক্ষার চ্যালেঞ্জগুলোকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধ দমনে পুলিশের নিরন্তর প্রচেষ্টার গুরুত্ব আবারও প্রমাণিত হলো।