মধ্যপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়, এফআইআরে মৃত ব্যক্তির নাম!

মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলার বাসোদা শহর থানার অন্তর্গত বারেৎ গ্রামে সম্প্রতি দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশি এফআইআরে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে দু’জন প্রায় এক দশক আগে মারা গেছেন। এমনকি, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলেন না।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ই জুলাই বারেৎ গ্রামে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। এই ঘটনার পর এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। কিন্তু পরবর্তীকালে অভিযুক্ত পক্ষ দাবি করে যে, এফআইআরে উল্লিখিত ব্যক্তিদের মধ্যে দু’জন বহু বছর আগেই মারা গেছেন। অন্য একজন অভিযুক্ত ওই ঘটনার সময় অন্য কোথাও ছিলেন এবং তাঁর উপস্থিতির পক্ষে সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণও পেশ করা হয়েছে।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২১শে জুলাই অভিযুক্ত পক্ষের প্রতিনিধিরা বিদিশার পুলিশ সুপারের (SP) সঙ্গে দেখা করেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ASP) প্রশান্ত চৌবে-র কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশান্ত চৌবে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, “আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে যেখানে বলা হয়েছে, এফআইআর-এ নাম থাকা এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে ছিলেন না এবং ঘটনার দিন তিনি কোথাও ছিলেন। এমনকি তারা এর পক্ষে সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণও দিয়েছেন।” তিনি আরও জানান যে, এফআইআর-এ উল্লেখিত আরও দু’জন ব্যক্তি অনেক আগেই মারা গিয়েছেন।
সাধারণত, বিরোধের ঘটনায় অভিযোগ পেলে এফআইআর দায়ের করা হয়, কিন্তু অভিযুক্তের পরিচয় নির্ধারিত হয় তদন্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে। প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ঘটনায় পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত প্রক্রিয়ায় ত্রুটির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগকারী রাজকুমার শর্মা বলেন, “১৭ই জুলাইয়ের ঘটনায় আমাদের এক নির্দোষ ব্যক্তিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এছাড়া এফআইআর-এ যাদের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে দু’জন অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তাই আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত ও নির্দোষদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানাতে এএসপি’র কাছে এসেছি।” তিনি আরও জানান, কর্মকর্তারা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং নিরপরাধদের মামলা থেকে বাদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পর ঘটনার পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একজন সাব-ডিভিশনাল অফিসার অফ পুলিশ (SDOP) এই তদন্ত পরিচালনা করবেন। এই ঘটনা মধ্যপ্রদেশ পুলিশের তদন্ত পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।