“টাকা পয়সা লুটেপুটে খেয়েছে সব…”-রেগে গিয়ে TMC-ছেড়ে CPIM-এ যোগ দিলেন বহু কর্মী

আর এক বছর পরেই রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শুরু হয়ে গেছে দলবদলের পালা। এই আবহে মুর্শিদাবাদের ডোমকলে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন কর্মী সিপিআই(এম)-এ যোগদান করেছেন। শুধু তাই নয়, বামেরা দাবি করেছে যে পাঁচ বছর আগে তাদের কাছ থেকে ‘দখল’ হয়ে যাওয়া পার্টি অফিসও তারা পুনরুদ্ধার করেছে। যদিও শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এই দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। ভোটের মুখে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র শোরগোল পড়ে গেছে।

জানা গেছে, ডোমকলের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক আনুষ্ঠানিকভাবে সিপিআই(এম)-এর পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, লাল ঝান্ডা হাতে নিয়ে তাঁরা সিপিআই(এম)-এর ‘হাত শক্ত’ করতে চান। একইসঙ্গে, তাঁরা দাবি করেছেন যে তাঁদের পুরনো পার্টি অফিসটিও পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। যদিও তৃণমূল শিবির পাল্টা দাবি করেছে যে পার্টি অফিসটি তাদের দখলেই রয়েছে এবং বামেদের দাবি ভিত্তিহীন। যোগদানকারী কর্মীরা অভিযোগ করেছেন যে তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’র কারণেই তাঁরা দলত্যাগ করেছেন। এই অভিযোগ পালটা অভিযোগের পর্বটি ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।

সিপিআই(এম)-এ যোগদানকারী আকাশ মোল্লা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “ওরা (তৃণমূল) টাকা পয়সা লুটেপুটে খেয়েছে। তাই প্রতিজ্ঞা করেছি এই দল (তৃণমূল) আর করব না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমরা সিপিআই(এম)-এর হাত শক্ত করব, ওদের অত্যাচার আর সহ্য করব না।” তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এই দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি, “পুরো বানানো, মিথ্যা অভিযোগ।”

আর এক বছর পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের ক্ষমতা দখলের লড়াইকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলই নিজেদের রণনীতি সাজাচ্ছে। অতীতেও বাংলার রাজনীতিতে ভোটের আগে নানা দলবদলের ঘটনা দেখা গেছে। বর্তমান রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বামেরা অনেকটাই ‘বেসামাল’। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শাসকদলের কর্মীদের সিপিআই(এম)-এ যোগদান বামেদের জন্য নতুন অক্সিজেন এনেছে এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন।

এই ঘটনা কি নিছকই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, নাকি এটি বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত? তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং সিপিআই(এম)-এর ‘পুনরুত্থান’ কি আসন্ন নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে? উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু মাস, তবে এটা স্পষ্ট যে ডোমকলের এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মানচিত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।