গর্ভাবস্থাটা যে কোনও মেয়ের কাছেই খুব স্পেশাল একটা সময়। হ্যাঁ, প্রথমদিকে সামান্য কিছু শারীরিক অসুবিধে থাকে তো বটেই। কিন্তু মা হওয়ার আনন্দ আর পরিপূর্ণতার কাছে তা তুচ্ছ হয়ে যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আজকাল যেহেতু বেশিরভাগ মেয়েকেই ঘর-বাইরে দুটো দিকই সামলানোর দায়ভার বইতে হচ্ছে, তাই গর্ভাবস্থাতেও নিশ্চিন্ত আরাম জোটে না। ফলে নিশ্চিতভাবে তৈরি হচ্ছে জটিলতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, ইদানীং প্রতি 10 জন শিশুর মধ্যে একেরও বেশি 40 সপ্তাহের পূর্ণ গর্ভকাল সমাপ্ত হওয়ার আগেই ভূমিষ্ঠ হচ্ছে এবং এই সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে অতি দ্রুত গতিতে। ফর্টিস হাসপাতাল আনন্দপুরের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও এনআইসিইউ ইনচার্জ ডা. সুমিতা সাহা বলছেন, ‘‘প্রি-ম্যাচিওর বাচ্চা আগেও হত, কিন্তু ইদানীং নিঃসন্দেহে সংখ্যাটা বেড়েছে। 32-37 সপ্তাহের মধ্যে শিশুর জন্ম হলে খাওয়ানো, অক্সিজেন সাপোর্ট আর ফ্লুইড ম্যানেজমেন্টের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তারও আগে শিশু ভূমিষ্ঠ হলে ইনটেনসিভ সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। তবে তারও আগে গর্ভবতী মায়েদের এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য কয়েকটি টিপস মেনে চলার উপদেশ দেবো।’’
স্ট্রেস ম্যানেজ করে চলার চেষ্টা করুন: গর্ভাবস্থায় যত কম স্ট্রেসে থাকবেন, তত ভালো থাকবে আপনার শিশু। নিজে স্ট্রেস ম্যানেজ করতে পারছেন না? তা হলে সাহায্য নিন পেশাদারের। সেই সঙ্গে পারিবারিক সাহায্যও একান্ত প্রয়োজনীয়।
জীবনযাত্রায় কিছু নিয়ন্ত্রণ আনা প্রয়োজন: মনে রাখবেন এমনিতেই দূষণের মাত্রা দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তার উপর যদি অতিরিক্ত ধূমপান বা মদ্যপান করেন, রাত জাগেন, হাঁটাচলা না করেন তা হলে সমস্যা আরও বাড়বে। গর্ভাবস্থাতেও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হাঁটাচলা করুন, ব্যায়াম করুন। খুশি থাকুন। সেই সঙ্গে জোর দিন সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার উপরেও।
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ডাক্তার দেখানো একান্ত প্রয়োজনীয়: যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, ডাক্তার দেখানোর সময় বের করে নিতেই হবে। কোনও কনসালটেশন যেন বাদ না পড়ে, তা দেখবেন। নিয়ম মেনে ওষুধপত্র খান। সাবধানে থাকুন।
বাচ্চা হওয়ার পরও কিছু সাবধানতা অবশ্যই মেনে চলা উচিত। সাধারণত প্রি-ম্যাচিওর বাচ্চারা একটু দুর্বল হয়। তার যেন ঠান্ডা না লাগে দেখতে হবে। সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, এরা একেবারে বেশি খেতে পারে না – বার বার অল্প অল্প করে ব্রেস্ট ফিড করানোর বন্দোবস্ত করতে হবে। বাড়িতে যেন কেউ ধূমপান না করেন, তা দেখতে হবে। বাচ্চার ধারে-কাছে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারেও বিশেষ যত্নশীল হওয়া উচিত।