অধিক চিন্তা, দীর্ঘক্ষণ কাজ, লম্বা সফরের কারণে নারীদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়া হরমোনাল সমস্যার কারণে স্থুলতা, মেদের কারণে সমস্যা দেখা দেয় স্তনেও। স্তন ঝুলে যাওয়া নারীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা। সন্তান প্রসবের পরও অনেক নারীর স্তন ঝুলে যায়। আরও কয়েকটি সমস্যা বিশেষজ্ঞরা আরও কয়েকটি সমস্যা নির্দিষ্ট করেছেন, যা হলো- বয়স, ওজনের পরিবর্তন, ধূমপান করা, পর্যাপ্ত সাপোর্ট ছাড়াই ভারী কাজ করার কারণে স্তন বড় হয়ে ঝুলে যায়।
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সাময়িকী ‘ল্যান্সেট’ তাদের এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে স্তন ঝুলে পড়ার কারণ ও সমাধান জানিয়েছে। আসুন জেনে নিই কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা যাবে…
ল্যান্সেট’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্তন ঝুলে যায়। বয়স যত বাড়তে কিশোরী থেকে নারীদের ত্বকের যে আবরণ বা চামড়াও ধীরে ধীরে কুঁচকে যায়। মুখের চামড়ার মত স্তুনের চামড়ার টান টান ভাবও দিন দিন মলিন হতে থাকে। বাসা বাড়ি বা অফিসে নানা কাজে অনেকক্ষণ ধরে একটানা ঝুঁকে বা নিচু হয়ে হয়ে কাজ করলে স্তনের আকারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এটি প্রথমে বোঝা না গেলেও কিছুদিন পার হলে বোঝা যায়।
সঠিক বক্ষবন্ধনী ব্যবহার না করলেও স্তন ঝুলে পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। একদম শুরু থেকেই সঠিক মাপের এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ব্রা নির্বাচন করলে এ সমস্যা থেকে খানিকা নিস্তার পাওয়া যায়। একই সঙ্গে দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম। ব্যায়ামের সময় স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার না করলে স্তন ঝুলে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। ব্যায়ামের সময় শরীরের ওপর প্রচুর চাপ পড়ে। স্তনের কোলাজেন তখন ভেঙে যেতে পারে। এ সময় সঠিক পরিচর্যা না পেলে স্তন সহজেই ঝলে যাবে।
ধূমপানের অভ্যাস স্তন ঝুলে যাওয়ার অন্যতম কারণ। নারী দেহের সেলে থাকা ইলাস্টেনে এর প্রভাব পড়ে। ইলাস্টেন ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করে, এতে স্তন ঝুলে যায়। তা ছাড়া বয়সের সাথে সাথে স্তনের সাইজ অনেক বেশি বড় এবং ভারী হয়ে যায়। স্থুলতা এর বড় কারণ। আবার সন্তান হলেও এ সমস্যা হয়। যাদের শারীরিক গঠন এমন হয়ে থাকে তাদের স্তন অন্যদের তুলনায় ঝুলে পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। জেনেটিকাল কারণেও স্তন ঝুলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
সমাধান-
১) প্রতিদিন নিয়ম মেনে ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করতে হবে। এতে আমাদের শারীরিক গঠন ঠিক থাকবে।
২) প্রতিদিনের খাবারের রুটিনে টাটকা শাক-সবজি এবং ফলমূল রাখতে হবে।
৩) যেকোনো ধরনের ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৪) বয়স এবং হাইট অনুযায়ী শরীরের ওজন স্বাভাবিক এবং নির্দিষ্ট রাখতে চেষ্টা করুন। শারীরিক ব্যালেন্স বজায় রাখাটা এক্ষেত্রে খুবই জরুরি।
৫) ধূমপান যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
৬) বাড়িতে বা অফিসে যেকোনো ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করতে হবে যতটা সম্ভব মেরুদণ্ড সোজা রেখে কাজ করতে।
৭) সারাদিনে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করতে হবে।
৮) সঠিক মাপের এবং কাজ অনুযায়ী সঠিক বক্ষবন্ধী নির্ধারণ করতে হবে।