যেকোনো খাবার খাওয়ার সময় বিষম খান অনেকেই! ‘হয়তো কেউ মনে করছে’ এমনটাই নিশ্চয়ই ভাবেন আপনিও! তবে এই ধারনাটি কিন্তু মোটেও ঠিক নয়। খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী পাশাপাশি থাকে। খাবার গেলার সময়ে খাবার বা পানীয় শ্বাসনালীতে না-ঢুকে খাদ্যনালীতে ঢোকে। তা স্নায়ু ও পেশির সুসংহত সমন্বয়ের ফল। তবে কোনো কারণে যখন এই সমন্বয় ব্যাহত হয়, তখন খাবার বা পানীয় শ্বাসনালীতে চলে যায়।
এতে ফুসফুস পর্যন্ত গিয়ে যাতে বিপত্তি না-ঘটায়, এজন্য শরীরের রিফ্লেক্স সিস্টেম কাশির দমক তৈরি করে। সেটাই বিষম। সাবধানে, কথা না-বলে, অন্যমনস্ক না-হয়ে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে চট করে বিষম লাগে না। স্নায়ুবিক সমস্যা না-থাকলে এমনিতে কেউ নিয়মিত বিষম খান না। ব্যাপারটা বিক্ষিপ্ত ঘটনাই। বিষম খেলে মাথায় ফুঁ-দেয়া বা মাথা-পিঠে চাপড় মারার চল আছে। এতে সত্যিই কি লাভ হয়?
মাথায় ফুঁ-দেয়ার সঙ্গে বিষমের সম্পর্ক নেই। তবে পিঠে চাপড় মারলে অনেক সময় শ্বাসনালীর মধ্যে থেকে খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, মাথা যেন সামনের দিকে ঝোঁকানো থাকে। নইলে খাবারের টুকরো আরো ভিতরে ঢুকে বিপদ বাড়াতে পারে। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো ‘হেইমলিক ম্যানুয়েভারে’র প্রয়োগ।
যিনি বিষম খাচ্ছেন, তাকে পিছন থেকে পেটে বেড় দিয়ে এমন ভাবে জাপটে ধরতে হবে এবং নিজের শরীরের ওপর ভর করে তাকে ওঠানোর চেষ্টা করতে হবে। যাতে আক্রান্তের পেটে চাপের সৃষ্টি তৈরি হয়। সেই চাপ ডায়াফ্রামের ওপর ধাক্কা দেয়। সেই অভিঘাতে শ্বাসনালী থেকে খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসে।
বিষম খাননি, এমন মানুষ নেই। ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক এবং এর নেপথ্যে রয়েছে শরীরেরই একটি রক্ষণাত্মক ভূমিকা। তবে প্রায় প্রতিবার খাওয়ার সময়েই হয়, তাহলে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা, স্নায়ুঘটিত সমস্যা থাকতে পারে। ডাক্তার দেখানোই বিচক্ষণতা। স্ট্রোকের পর, পার্কিনসন্স, মোটর নিউরন ডিজিজ, মায়েস্থেনিয়া গ্রেভিসের মতো স্নায়ুবিক রোগে বারংবার বিষম লাগে।