কোভিড ভাইরাসের আতঙ্ক সর্বত্র! শুধু স্বাস্থ্যক্ষেত্রেই নয়, করোনার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। তিন দফার লকডাউনে দেশের শিল্পবাণিজ্য প্রায় তলানিতে ঠেকেছে, চাকরিক্ষেত্রেও খাঁড়া ঝুলছে মাথার উপর, সর্বত্রই এক ভয়ানক অনিশ্চয়তা। স্বাভাবিকভাবেই যথাসম্ভব খরচ কমানোর পথে হাঁটতে চাইছেন বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে যদি আপনার স্বামী হাত খুলে খরচ করতে শুরু করেন, তা হলে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়? সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অথচ খরচে বিন্দুমাত্র রাশ টানতে না পারার ফলে এক বিপুল আশঙ্কা যেন গ্রাস করতে আসে। স্বাভাবিকভাবেই স্বামীর সঙ্গে মতের অমিল, কথা কাটাকাটি, তিক্ততা চলতেই থাকে, আর এ সবেরই প্রভাব পড়ে সম্পর্কের উপর।
সমস্যাটা গুরুতর সন্দেহ নেই! কিন্তু একটা কথা আপনাকে বুঝতে হবে, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করে এ সমস্যার সমাধান হবে না। যে কোনও কারণেই হোক, আপনার স্বামী সমস্যাটার গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না, ফলে খরচেও রাশ টানছেন না। ফলে স্বামীকে পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলাটাই আপনার একমাত্র কাজ। কীভাবে সেটা সম্ভব? কিছু পরামর্শ রইল আমাদের পক্ষ থেকে।
স্বামীর সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলুন
রাগারাগি বা দোষারোপ করে লাভ নেই, বরং ভালোবেসে বোঝান। কেন টাকা হাতে রাখা দরকার, কেন এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো দরকার, সে কথা বুঝিয়ে বলুন। দরকার হলে কৌশলে কিছু টাকা বিনিয়োগ করে রাখুন যে কোনও নিরাপদ স্কিমে। কোনও মতেই ঝগড়াঝাঁটির পথে হাঁটবেন না, তাতে উনি আপনাকে গোপন করে খরচ করতে শুরু করতে পারেন।
বাজেট তৈরি করুন
মাসের খরচপত্র বেঁধে দিন। স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেই সাংসারিক নানা খরচের লিস্ট করে প্রতিটির দাম লিখে মোট খরচের হিসেব করে নিন আর সেট মেনে চলুন। যদি স্বামীকে বোঝাতে পারেন অকারণ খরচের ফলে আপনাদের ধারবাকি বেড়ে যাচ্ছে, তা হলে আপনি সফল।
লক্ষ্য স্থির করুন বুঝেশুনে
অবাস্তব, অসম্ভব টার্গেট সেট করবেন না। রাতারাতি সমস্ত বাড়তি খরচ পুরোপুরি ছেঁটে ফেলা সম্ভব নয়। ছোট লক্ষ্য স্থির করুন, সেই ছোট লক্ষ্যে প্রথমে পৌঁছোতে চেষ্টা করুন। অনেকগুলো ছোট খরচ বাঁচাতে পারলেই বড়ো সেভিংস করে ফেলতে পারবেন।
নিয়মিত স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করুন
টাকাপয়সা, খরচপত্র নিয়ে নিয়মিত স্বামীর সঙ্গে বসুন। কতটা খরচ বাঁচানো গেল, আরও কতটা বাঁচানো সম্ভব, কেন সে টাকাটা বাঁচানো দরকার, এ সব নিয়ে কথা বলুন ওঁর সঙ্গে। ওঁর বেশি খরচের অভ্যেস থাকলে তা থেকে সহজে উনি বেরোতে পারবেন না। কিন্তু একবার যদি সঞ্চয়ের মজাটা পেয়ে যান, তা হলেই কিন্তু খেলা ঘুরে যাবে। অতএব ধৈর্য হারাবেন না, বরং ওঁর মধ্যেও আপনার সঞ্চয়ের নেশা চারিয়ে দিন।ts