“দেশজুড়ে চলছে ভয়ের রাজনীতি”, মোদী জমানায় সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা এক গভীর ক্ষত। সেই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাজধর্ম’ পালনের যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তা আজও প্রাসঙ্গিক। শুক্রবার সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণ করে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র শোরগোল।

ভিডিওটি পোস্ট করে অভিষেক দেশের বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় অভিযোগ করেন, “ভারতের সামাজিক পরিবেশকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষিয়ে তোলা হচ্ছে।” তাঁর মতে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বর্তমানে গণপিটুনি, নিগ্রহ এবং সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পিত সহিংসতা চালানো হচ্ছে। নিজের এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতার দাপটে দলিত, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর প্রকাশ্য হামলা চালাচ্ছে কট্টর ডানপন্থী শক্তিগুলি।

তৃণমূল সাংসদ আরও যোগ করেন, “ধর্মের আড়ালে প্রকাশ্য হুমকি, ঘৃণা এবং ভয়ের রাজনীতি কায়েম করার চেষ্টা চলছে। যারা সমাজে শান্তি ও সমতার পক্ষে, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।” যদিও তিনি কোনো নির্দিষ্ট একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেননি, তবে সাম্প্রতিক দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অশান্তির চিত্রকে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তাঁর এই বার্তাটি কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, বরং একজন সচেতন নাগরিক হিসেবেও মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ভিডিও বার্তা সরাসরি দেশের শাসকবর্গের দিকে আঙুল তুলছে। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, শাসকদের প্রধান কাজ হওয়া উচিত সামাজিক সমতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা, ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বা হিংসার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা নয়। দলিত ও আদিবাসীদের নিরাপত্তার অভাব দেশের রাজনৈতিক স্বাস্থ্যের জন্য যে ক্ষতিকর, সেই বার্তাও তিনি স্পষ্ট করেছেন।

ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে অভিষেকের এই অবস্থান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিরোধীরা তাঁর সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানালেও, শাসক শিবির থেকে এসেছে পাল্টা সমালোচনা। তবে অভিষেক নিজের অবস্থানে অনড়। তাঁর সাফ কথা, “সমাজে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কখনও হিম্মত হারানো যাবে না।” যুবসমাজ ও নাগরিক সমাজকে সচেতন করতে তাঁর এই বার্তা এক নতুন মাত্রা যোগ করল।