বিহারি ছাত্রদের টেক্কা দিচ্ছে রাজস্থান-হরিয়ানা! সিভিল সার্ভিসে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কোন রহস্য?

এক সময় ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষার ফলাফল মানেই ছিল বিহারি মেধাবীদের জয়জয়কার। সিভিল সার্ভিস মানেই ছিল বিহারের একছত্র আধিপত্য। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, সময়ের সাথে সাথে আইএএস (IAS) বা আইপিএস (IPS) অফিসার হওয়ার দৌড়ে বিহারের সেই পুরনো দাপট আগের চেয়ে ফিকে হয়ে আসছে। কিন্তু কেন? বিহারের এই পিছিয়ে পড়ার পেছনের কারণ কী? এই নিয়ে মুখ খুলেছেন ‘দৃষ্টি IAS’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত শিক্ষক ডঃ বিকাশ দিব্যকীর্তি।
উচ্চবিত্তদের পছন্দ এবং সামাজিক বিবর্তন: বিকাশ দিব্যকীর্তি বলেন, ২০০০ সালের দিকে যখন আমরা অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের তালিকা দেখতাম, তখন দেখা যেত তাদের বেশিরভাগই কেরালা বা তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। এর কারণ ছিল ১৯৬০ এবং ৭০-এর দশকের সামাজিক আন্দোলন। সেই সময় দক্ষিণ ভারতে এক বড় সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, যার ফলে সেখানকার উচ্চবিত্ত এবং শিক্ষিত সমাজ কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিকে সবথেকে নিরাপদ এবং আকর্ষণীয় মনে করতে শুরু করে।
বিহারের আধিপত্য এবং পরবর্তী পরিবর্তন: দক্ষিণ ভারতের পর উত্তর ভারতে বিশেষ করে বিহারে এই ধারা শুরু হয়। বিহারের যুবকদের মধ্যে ‘সামাজিক মর্যাদা’ বা ঊর্ধ্বমুখী গতিশীলতার আকাঙ্ক্ষা সিভিল সার্ভিসের প্রতি প্রবল আগ্রহ তৈরি করে। কিন্তু দিব্যকীর্তি স্যারের মতে, এখন পরিস্থিতি বদলেছে। আজ আর শুধু বিহার বা উত্তরপ্রদেশ নয়, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলোতেও সিভিল সার্ভিসে যোগদানের প্রবণতা আকাশচুম্বী।
কেন ডেটা একপেশে মনে হচ্ছে? তিনি আরও বিশ্লেষণ করে বলেন, “এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে বিহারি শিক্ষার্থীদের মেধা কমে গেছে বা আগ্রহ নেই। বরং আগে অন্য অনেক রাজ্যে এই প্রবণতা কম ছিল, যার ফলে বিহারের ফলাফল অনেক বেশি উজ্জ্বল দেখাত। এখন যখন সব রাজ্য থেকে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা সমানতালে লড়াই করছে, তখন বিহারের সেই পুরনো আধিপত্য আগের মতো আর একপেশে থাকছে না। তথ্যের এই ভারসাম্যই এখন নজরে পড়ছে।”
সহজ কথায়, প্রতিযোগিতার ময়দান এখন অনেক বেশি বড় এবং বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে, যার প্রভাবে বিহারের প্রাক্তন একাধিপত্য এখন চ্যালেঞ্জের মুখে।