“রোগীর অনুভূতিই সবার আগে!” ট্রমার শিকার মানুষদের জন্য কেন আলাদা ক্লিনিক গড়ছে রাজ্য সরকার?

চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে লিঙ্গ যেন কোনো বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, তা সুনিশ্চিত করতে কোমর বেঁধে নামছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বিশেষ করে এলজিবিটিকিউ (LGBTQ+) সম্প্রদায়, যৌন নির্যাতন বা অ্যাসিড আক্রান্তদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে এসএসকেএম হাসপাতালের ‘ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি’ (IOP)-তে একটি বিশেষ ক্লিনিক খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ভবনে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের কর্মশালায় এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মানসিক যন্ত্রণার নীরবতা ভাঙার চেষ্টা ‘স্বাস্থ্যসেবায় লিঙ্গ-অন্তর্ভুক্তির প্রয়োগ’ শীর্ষক এই কর্মশালায় উঠে আসে এক কঠিন বাস্তব। বিশেষজ্ঞরা জানান:
যৌন নির্যাতন বা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার মানুষরা লোকলজ্জার ভয়ে অনেক সময় নিজেদের মানসিক আঘাতের কথা বলতে সংকোচ বোধ করেন।
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা সাধারণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনেক সময় নিজেদের নিরাপদ বোধ করেন না।
এই বাধা দূর করতেই সম্মান, সহানুভূতি ও একটি নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
এসএসকেএম-এ বিশেষ উদ্যোগ আইওপি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ময়াঙ্ক কুমার জানান, খুব শীঘ্রই ‘জেন্ডার অ্যাফারমেটিভ স্পেশ্যাল মেন্টাল হেল্থ ক্লিনিক’ চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে:
পুরুষ, মহিলা বা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের যে কেউ নির্ভয়ে তাঁদের মনের কথা বলতে পারবেন।
চিকিৎসক, মনোবিদ ও সোশ্যাল ওয়ার্কারদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তাঁরা রোগীদের অনুভূতির মর্যাদা দিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন।
শীর্ষ আধিকারিকদের বার্তা এই উদ্যোগকে সফল করতে স্বাস্থ্য অধিকর্তা চিকিৎসক স্বপন সোরেন, জনস্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসক দেবাশিস হালদার সহ একাধিক শীর্ষ আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। আইওপি-র অধিকর্তা চিকিৎসক অমিত ভট্টাচার্য জানান, নিয়মিত কর্মশালার মাধ্যমে এই সংবেদনশীলতা প্রত্যন্ত এলাকাতেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এই ভোলবদল কেবল চিকিৎসার আধুনিকীকরণ নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের এক অনন্য প্রচেষ্টা।