ঋণের দায়ে পাগলপ্ৰায়, শেষ চেষ্টার ১৪০ টাকাই দিল ১ কোটি! লটারি জিতে সোজা থানায় বংশীহারীর কৃষ্ণপদ।

সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দশা, মাথার ওপর পাহাড়প্রমাণ ঋণের বোঝা। এর মাঝেই লটারির টিকিট কাটার নেশা নিয়ে মাঝেমধ্যেই পরিবারে লাগত অশান্তি। কিন্তু সেই নেশাই যে একদিন ভাগ্যবিধাতা হয়ে দেখা দেবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণপদ সিংহ। শনিবার সকালে মাত্র ১৪০ টাকার লটারি কেটে ১ কোটি টাকা জিতলেন তিনি।
দোকানদার থেকে কোটিপতি পেশায় কৃষ্ণপদবাবু মহাবাড়ি পঞ্চায়েত এলাকার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। একটি পান-বিড়ি-সিগারেটের দোকান চালানোর পাশাপাশি একটি সমবায় ব্যাঙ্কেও কাজ করেন তিনি। অভাবের সংসারে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ছিল তাঁর লড়াই। এর আগে মানি মার্কেটে টাকা লগ্নি করে সর্বস্ব খুইয়ে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি।
ব্যাঙ্কে কাজ করতে করতেই মিলল খবর এদিন লটারি জেতার মুহূর্তটি ছিল নাটকের মতো। কৃষ্ণপদবাবু জানান:
“আমি তখন সমবায় ব্যাঙ্কেই কাজ করছিলাম। হঠাৎ টিকিট মেলাতে গিয়ে দেখি ১ কোটি টাকা লেগেছে! আনন্দে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চিৎকার করে ফেলি।”
নিরাপত্তার জন্য সোজা থানায় টাকা জেতার খবর পেতেই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার তাঁকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে কৃষ্ণপদবাবু দ্রুত বাড়ি গিয়ে স্ত্রী গগনি সিংহকে সঙ্গে নিয়ে সোজা হাজির হন বংশীহারী থানায়। নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঋণের চাপে পিষ্ট কৃষ্ণপদবাবুর প্রথম লক্ষ্য এখন দেনা মেটানো। তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, “ভগবানের ইচ্ছায় এই টাকা পেয়েছি। অনেক কষ্টে সংসার চলছিল, এবার ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাব।”
কৃষ্ণপদবাবুর এই অভাবনীয় জয়ে গোটা এলাকায় যেমন খুশির হাওয়া, তেমনই চাঞ্চল্যও ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের মুখে এখন একটাই কথা— ‘সবই ভাগ্যের খেলা!’