গোপীনাথ বোরদোলোই নিজের দলের বিরুদ্ধে না দাঁড়ালে আজ আসাম ভারতের থাকত না! বিমানবন্দরে বিস্ফোরক মোদী।

উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নের মুকুটে যুক্ত হলো আরও একটি পালক। শনিবার আসামের গুয়াহাটিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত গোপীনাথ বোরদোলোই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই মঞ্চ থেকেই পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, কংগ্রেস কেবল আসামকে অবহেলাই করেনি, বরং এই রাজ্যের অস্তিত্ব মুছে ফেলার ‘ষড়যন্ত্র’ও করেছিল।

আসাম কি পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হতে চলেছিল? প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে এক চাঞ্চল্যকর ঐতিহাসিক প্রসঙ্গের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার আগে যখন মুসলিম লীগ এবং ব্রিটিশরা দেশভাগের নকশা তৈরি করছিল, তখন আসামকে অবিভক্ত বাংলার তথা পূর্ব পাকিস্তানের অংশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর দাবি:

“কংগ্রেস সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হতে চলেছিল। কিন্তু গোপীনাথ বোরদোলোই নিজের দলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর সাহসের কারণেই আজ আসাম ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তৎকালীন সরকার আসামের সাংস্কৃতিক ও কৌশলগত গুরুত্বকে সবসময় উপেক্ষা করেছে।”

কংগ্রেসের ‘পাপ’ বনাম মোদীর ‘উন্নয়ন’ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কংগ্রেসের আমলে উত্তর-পূর্ব ভারতের কথা উঠলেই অবজ্ঞার সুরে বলা হতো— “ওখানে কে যাবে?” এই মানসিকতার কারণেই অঞ্চলটি আধুনিক রেল, সড়ক ও বিমান যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। মোদীর দাবি, তাঁর সরকার গত কয়েক বছরে এই অবহেলার ‘পাপ’ ধুয়ে ফেলার কাজ করছে। আজ আসাম ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’র প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে উঠছে, যা আসিয়ান দেশগুলোর সাথে ভারতের সংযোগ ঘটাবে।

উত্তর-পূর্বের নতুন অর্থনৈতিক ইঞ্জিন নতুন বিমানবন্দর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন:

এটি কেবল একটি ভবন নয়, এটি উত্তর-পূর্বের বাণিজ্যের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

পর্যটন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আসাম এক বিশাল লম্ফ দেবে।

ভারতের লক্ষ্য বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়া, আর সেই যাত্রায় আসাম হবে অন্যতম প্রধান শক্তি।

আসন্ন নির্বাচনী আবহাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর এই ‘আবেগ ও উন্নয়ন’ মিশ্রিত ভাষণ আসামের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।