“আকাশে ওত পেতে থাকবে ঘাতক!” DRDO-র নতুন মিসাইল ২৫০ কিমি দূর থেকে চিনে নেবে শত্রু, যুদ্ধের সংজ্ঞা বদলাবে ভারত।

প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে স্বনির্ভর হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ভারত। ভারতীয় বিমান বাহিনীর (IAF) জন্য এবার নতুন প্রজন্মের আকাশ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র (Air Launched Cruise Missile) তৈরির কাজ শুরু করল ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও (DRDO)। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি কেবল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাতই করবে না, বরং আকাশে ওত পেতে থেকে সঠিক সময় বুঝে হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখবে।
আকাশে ঘুরবে, তারপর করবে হামলা (Loitering Capability) এই ক্ষেপণাস্ত্রটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর ‘লোয়টারিং’ ক্ষমতা। উৎক্ষেপণের পর এটি সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে আছড়ে পড়বে না। পরিবর্তে, এটি লক্ষ্যবস্তু এলাকার ওপর দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ প্রদক্ষিণ বা ঘোরাফেরা করবে। এই সময়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করবে এবং লাইভ ভিডিও বা তথ্য যুদ্ধবিমানে থাকা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাতে থাকবে।
মানুষের নিয়ন্ত্রণ ও নির্ভুল নিশান এই সিস্টেমে চূড়ান্ত হামলার সিদ্ধান্ত নেবেন একজন মানব অপারেটর। যুদ্ধবিমানে থাকা অস্ত্র ব্যবস্থা কর্মকর্তা (WSO) যখন লক্ষ্যবস্তু নিশ্চিত করবেন এবং আক্রমণের সবুজ সংকেত দেবেন, তখনই ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানবে। এর ফলে:
ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য হয়ে যাবে।
আশেপাশে থাকা সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমবে।
শত্রু যদি স্থান পরিবর্তন করে, তবে সেটিকে খুঁজে বের করা সহজ হবে।
৫০ কেজি বিস্ফোরক ও ২৫০ কিমি পাল্লা ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এতে থাকছে প্রায় ৫০ কিলোগ্রাম ওজনের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক (ওয়ারহেড)। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য এতে জিপিএস (GPS) এবং আইএনএস (INS) ভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ‘মডুলার’ ডিজাইনের কারণে প্রয়োজন অনুযায়ী এতে বিভিন্ন ধরণের সেন্সর বা ইনফ্রারেড সিকার লাগানো সম্ভব হবে।
স্থল ও জল—উভয় ক্ষেত্রেই অপ্রতিরোধ্য ডিআরডিও এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে এমনভাবে ডিজাইন করছে যা দিয়ে স্থলভাগের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি যেমন ধ্বংস করা যাবে, তেমনই সমুদ্রের বুকে শত্রু জাহাজ বা সরবরাহকারী জাহাজকেও নিখুঁতভাবে নিশানা করা যাবে। বিশেষ করে যে সমস্ত লক্ষ্যবস্তু খুব অল্প সময়ের জন্য সামনে আসে বা দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, তাদের ধ্বংস করতে এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠবে।