“মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ!” বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিধন রুখতে কূটনৈতিক আলোচনার দাবি প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র। সম্প্রতি ময়মনসিংহের ভালুকায় হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ করে তিনি কেন্দ্র সরকারকে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দ্রুত কূটনৈতিক আলোচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
“চরম অমানবিক হত্যাকাণ্ড” গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে ‘ধর্ম অবমাননা’র মিথ্যা অভিযোগে একদল উন্মত্ত জনতা পিটিয়ে হত্যা করে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে লিখেছেন:
“বাংলাদেশে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কোনো সভ্য সমাজে ধর্ম, জাত বা পরিচয়ের ভিত্তিতে বৈষম্য ও সহিংসতা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। ভারত সরকারের উচিত প্রতিবেশী দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের ওপর বাড়তে থাকা অত্যাচারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা।”
শশী থারুরের প্রশ্ন ও কূটনৈতিক উদ্বেগ কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলাদেশ সরকার নিন্দা জানালেও দোষীদের শাস্তির জন্য এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখতে আদতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? অন্যদিকে, অসমের মন্ত্রী পীযূষ হাজারিকা এই ঘটনাকে সীমান্তের ওপারের ‘ডেমোগ্রাফিক শিফট’ বা জনবিন্যাস পরিবর্তনের বিপজ্জনক ফলাফল হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ঘটনার নৃশংসতা ও বর্তমান পরিস্থিতি স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের মতে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ দীপুকে পিটিয়ে মারার পর তাঁর দেহটি একটি গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই বীভৎস দৃশ্যের ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যপক ক্ষোভ তৈরি হয়।
গ্রেফতার: শনিবার বাংলাদেশ পুলিশ ও র্যাব (RAB) এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বয়স ১৯ থেকে ৪৬ বছরের মধ্যে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “নতুন বাংলাদেশে এই ধরণের সহিংসতার কোনো স্থান নেই।”
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনায় ভারত সরকারও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর এই দাবি সেই কূটনৈতিক চাপকে আরও বাড়িয়ে দিল।