নৌবাহিনীতে ‘রোমিও’, পাকিস্তান ও চিনের কাছে দুঃস্বপ্ন MH-60R হেলিকপ্টার, জেনেনিন কেন?

ভারত মহাসাগরে চিনা নৌবাহিনীর দাপট এবং পাকিস্তান-চিন সাবমেরিনের যৌথ হুমকি মোকাবিলায় এবার বড়সড় চাল চালল ভারতীয় নৌবাহিনী। বুধবার গোয়ার INS হানসা নৌ-ঘাঁটিতে MH-60R ‘রোমিও’ বহুমুখী হেলিকপ্টারের দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড্রন (INAS ৩৩৫ – অস্প্রে) কমিশন করা হল। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠী এই অত্যাধুনিক স্কোয়াড্রনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
আমেরিকার লকহিড মার্টিন থেকে কেনা ২৪টি রোমিও হেলিকপ্টারের মধ্যে এটি দ্বিতীয় স্কোয়াড্রন। এর আগে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে কোচিতে প্রথম স্কোয়াড্রনটি নামানো হয়েছিল। এই অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
💀 কেন এই ‘রোমিও’ হেলিকপ্টার এত ভয়ংকর?
MH-60R ‘রোমিও’ হেলিকপ্টারকে বিশ্বের অন্যতম সেরা মাল্টি-মিশন কপ্টার বলা হয়। মার্কিন নৌবাহিনীর প্রধান ভরসা এই কপ্টারটি এখন ভারতীয় নৌসেনার তুরুপের তাস। এর বিশেষত্বগুলি হলো:
-
ভয়ংকর অস্ত্রভাণ্ডার: এতে রয়েছে হেলফায়ার মিসাইল, মার্ক-৫৪ টর্পেডো এবং অত্যাধুনিক রকেট ও মেশিনগান।
-
সাবমেরিন শিকারি: এর ‘ডিপিং সোনার’ এবং ‘সোনোবয় লঞ্চ সিস্টেম’ সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা শত্রু সাবমেরিনকে নিমেষে শনাক্ত করে ধ্বংস করতে সক্ষম।
-
রণতরী থেকে উড্ডয়ন: এটি ভারতের বিমানবাহী রণতরী INS বিক্রমাদিত্য ও INS বিক্রান্ত ছাড়াও ডেস্ট্রয়ার ও ফ্রিগেট থেকে অনায়াসেই ওঠানামা করতে পারে।
-
আত্মরক্ষা প্রযুক্তি: এতে রয়েছে ইনফ্রারেড কাউন্টারমেজার ব্যবস্থা, যা শত্রু মিসাইলের হুমকি টের পেলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
🌏 ভারত মহাসাগরে কৌশলগত গুরুত্ব
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (IOR) যেভাবে চিনা প্রভাব বাড়ছে, তাতে রোমিও হেলিকপ্টার ভারতের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হতে চলেছে। অপারেশন ‘সিন্দুর’-এর প্রেক্ষাপটে আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। এই কপ্টারগুলো দূর থেকেই শত্রু সাবমেরিন ট্র্যাক করে আক্রমণ চালাতে পারে, ফলে ভারতীয় রণতরীগুলোর নিরাপত্তা বহুগুণ বেড়ে গেল।
INAS 335-এর কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন ধীরেন্দ্র বিষ্টের মতে, এই হেলিকপ্টার প্রচলিত যুদ্ধের পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অসমমিত হুমকি মোকাবিলায় সমান দক্ষ। পাইলটরা একে ডাকছেন সমুদ্রে “শত্রুর দুঃস্বপ্ন” নামে।