প্রেমে পড়লে সত্যি বলতে কি মানুষের তালজ্ঞান থাকে না! তখন গ্রীষ্মের প্রখর রোদকেও মনে হয় বসন্তের বাতাস, নিজের মনের মানুষটিকে মনে হয় হলিউডের হিরো! কিন্তু এমন হাবুডুবু প্রেম সামলাতে গিয়েই জীবনের সবচেয়ে বড়ো ভুলটি করে বসেন অনেক মেয়ে। সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হয়ে যায়, ফলে ভবিষ্যতে সমস্যার পথটাও প্রশস্ত হয়। তাই যত প্রেমেই পড়ুন না কেন, মাথাটা পরিষ্কার রাখুন। আর প্রেম নিয়ে বেশি হাবুডুবু খাওয়ার আগে নিজেকে কয়েকটা প্রশ্ন করুন, তার উত্তরটা নিজে সৎভাবে দিন। তাতে আপনারই ভবিষ্যতের প্রেমজীবন আরও সুখের হয়ে উঠবে।
প্রশ্ন 1. আমি কি স্থায়ী সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত?
অনেক সময় কাউকে প্রাথমিকভাবে ভীষণ ভালো লেগে যায়, তাঁর সঙ্গে সময় কাটাতেও ভালো লাগে, কিন্তু কেন কে জানে, মনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ছবিটা ঠিকমতো আঁকা হয় না। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, এই পুরুষটির সঙ্গেই আপনি বাকি জীবনটা কাটাতে চান কিনা। উত্তরটা যদি এক বাক্যে হ্যাঁ হয়, এগিয়ে যান। কিন্তু কোনওরকম সংশয় থাকলে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করুন।
প্রশ্ন 2. আমার যৌনজীবন কি সুখের?
যৌনজীবন ঠিকঠাক না এগোলে সম্পর্ক তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে বেশি সময় লাগে না। ভেবে দেখুন আপনার সেক্স লাইফটা কেমন। প্রথমবার যেমন ছিল, এখনও কি ততটাই উত্তেজক রয়েছে? পার্টনার সেক্সের প্রসঙ্গ তুললে কি আপনি আগের মতোই উৎসাহ বোধ করেন? উত্তরগুলো ইতিবাচক হলে চিন্তা নেই, কিন্তু উত্তর যদি ‘না’ হয়, তবে পার্টনারের সঙ্গে সিরিয়াস আলোচনা করার সময় হয়েছে।
প্রশ্ন 3. এই সম্পর্কটা কি আমার ব্যক্তিত্বে বিকাশে প্রভাব ফেলছে?
পার্টনারের কাছে স্বাধীনভাবে নিজের মতপ্রকাশ করতে কি আপনি দ্বিধাবোধ করেন? এই প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে আপনার সম্পর্কের ভবিষ্যৎ। যে সম্পর্কে এক পক্ষ নিজের মতামত, ব্যক্তিত্ব চেপে থাকতে বাধ্য হন, সেই সম্পর্ক কখনও সুস্থ হতে পারে না। এরকম পরিস্থিতি আপনার সঙ্গেও হলে মানিয়ে নিয়ে সম্পর্কটা বাঁচানোর চেষ্টা করবেন না। নিজের ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করুন, তাতে সংঘাত হলে সম্পর্ক ছিন্ন করুন। তাতে আপনিই জীবনে শান্তি পাবেন।
প্রশ্ন 4. সঙ্গীর পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আমি কি মানিয়ে নিতে পেরেছি?
প্রেম আর বিয়ে শুধু দু’জন মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দু’জনের পরিবার, বন্ধুবান্ধবও সেই সম্পর্কের অন্তর্গত। তাই পদে পদে প্রেমিক/স্বামীর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে সংঘাত হলে সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা মুশকিল। তবে তাড়াহুড়ো করবেন না, সঙ্গীর বাড়ির লোকদের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দিন নিজেকে। নিয়মিত দেখা করুন, বেড়াতে যান, সময় কাটান একসঙ্গে। কিন্তু যথেষ্ট প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পার্টনারের সঙ্গে কথা বলুন।
প্রশ্ন 5. আমরা কি পরস্পরের বিশ্বাস ও মতাদর্শকে সম্মান করি?
অনেক সময়ই বিশ্বাস ও মতাদর্শগত পার্থক্য নিয়ে আমরা বেশি মাথা ঘামাই না এবং এই সব প্রসঙ্গ ধামাচাপা দিয়ে রাখতেই স্বচ্ছন্দবোধ করি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এই সব পার্থক্য সুস্থ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। র্ধমবিশ্বাস, রাজনৈতিক মতাদর্শ, জীবনশৈলীর পার্থক্য, খাদ্যাভ্যাসের পার্থক্যের মতো সমস্যা থাকলে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়াও আশ্চর্যের নয়। তাই প্রথম থেকেই এই সব বিষয় নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করে নিন, পরস্পরের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সম্মান বজায় রাখতে পারলে তবেই এগোন।