হঠাৎ ট্রাম্পের ফোন, ঘুম থেকে তুলে সাংবাদিককে দিলেন সাক্ষাৎকার, জেনেনিন কি কারণ ?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বিশেষ অভ্যাস হলো, কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে সাংবাদিকদের ফোন করা। ক্যামেরার সামনে বসে পরিকল্পিত সাক্ষাৎকার দেওয়ার চেয়ে তিনি টেলিফোনে তাৎক্ষণিক আলাপচারিতা বেশি পছন্দ করেন। আর এমনই এক ঘটনা ঘটল গত সোমবার রাতে, যখন তিনি বিবিসির প্রধান উত্তর আমেরিকা সংবাদদাতা গ্যারি ও’ডোনোগুকে ফোন দেন, আর তখন ওই সাংবাদিক ঘুমাচ্ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সাক্ষাৎকারের আকস্মিকতা
বিবিসি-র প্রতিবেদনে সাংবাদিক গ্যারি ও’ডোনোগু লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্যামেরার সামনে বসে পরিকল্পিত সাক্ষাৎকার দেওয়ার চেয়ে হঠাৎ টেলিফোনে আলাপচারিতা বেশি পছন্দ করেন। সোমবার সন্ধ্যায় এমন ফোন পেলাম আমিও। একেবারে খোলাখুলি বলি— ফোন আসার সময় আমি ঘুমাচ্ছিলাম।”
গ্যারি জানিয়েছেন, গত পাঁচ দিন ধরে তাঁর মনে হচ্ছিল যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার পাওয়ার সামান্য হলেও সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর পেনসিলভেনিয়ার বাটলারে ট্রাম্পের ওপর চালানো আততায়ীর হামলার এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হতে পারত। সেই হামলার সময় থেকেই গ্যারির রিপোর্টিং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল, যা সম্ভবত ট্রাম্পের দৃষ্টিগোচরও হয়। গ্যারি ভেবেছিলেন, সেটাই হয়তো সাক্ষাৎকারের একটি পথ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য এমন সুযোগ খুবই বিরল।
প্রথম কল এবং সুযোগ হারানোর আশঙ্কা
রোববার রাতেই গ্যারিকে জানানো হয়েছিল যে, তিনি যেকোনো মুহূর্তে প্রেসিডেন্টের ফোন পেতে পারেন। তাই তার পুরো দল প্রস্তুত ছিল, রেকর্ডিংয়ের সব ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেই রাতটি কেটে যায় – ফোন আর আসেনি।
পরদিন রাত, অর্থাৎ সোমবার, গ্যারি ধরে নিয়েছিলেন সাক্ষাৎকার আর হচ্ছে না। টানা কয়েক সপ্তাহের কাজ এবং কোনো ছুটির দিন না থাকায় তিনি ক্লান্ত ছিলেন এবং একটু ঘুমাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই ফোনটি বাজল।
ঘুম জড়ানো কণ্ঠে গ্যারি ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বললেন, “হাই গ্যারি, আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আছি, নিন কথা বলুন।” গ্যারি দ্রুত ড্রইংরুমে গিয়ে রেকর্ডার খুঁজতে শুরু করতেই লাইনটা কেটে গেল। তিনি ভেবেছিলেন, এই সুযোগ বোধহয় হাতছাড়া হলো।
দ্বিতীয় সুযোগ ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
কিন্তু কয়েক মিনিট পরেই আবারও ফোন এলো। এবার আর ভুল হলো না। শেষ পর্যন্ত গ্যারি প্রায় ২০ মিনিট ধরে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
তাদের কথোপকথনের বিষয়বস্তুর মধ্যে ছিল বাটলারের সেই রাতের ঘটনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্পের হতাশা, হঠাৎ করে তার ন্যাটো সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং এমনকি যুক্তরাজ্যের বাইরেও জীবন আবিষ্কার করা নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। এই অপ্রত্যাশিত সাক্ষাৎকারটি ট্রাম্পের নিজস্ব স্টাইলের এক অসাধারণ উদাহরণ হয়ে রইল।