রথযাত্রা উৎসবের প্রাক্কালে দিঘায় পর্যটকদের কাছ থেকে হোটেলগুলোর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রবণতা রুখতে এবার কোমর বেঁধে নেমেছে জেলা প্রশাসন। কালোবাজারি বন্ধ করতে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে হোটেল মালিকদের। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ভাড়ার তালিকার বাইরে অতিরিক্ত টাকা নিলেই গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা, এমনকি বাতিল হতে পারে হোটেলের অনুমোদনও।
ভাড়ার তালিকা টাঙানো বাধ্যতামূলক, সরাসরি অভিযোগের সুযোগ:
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ, বুধবার থেকেই দিঘার প্রতিটি হোটেলে ভাড়ার তালিকা টাঙানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই তালিকার নিচে একটি ওয়েবসাইট ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থাকবে, যার মাধ্যমে পর্যটকরা সরাসরি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ জানাতে পারবেন।
হোটেল মালিক সংগঠনকে তাদের ভাড়ার তালিকা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদে (DSDA) জমা দিতে হবে। পর্ষদের পক্ষ থেকে হোটেলগুলোতে ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ বা আকস্মিক পরিদর্শন চালানো হবে। যদি পর্যটকদের অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়, তবে হোটেল মালিককে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়াও, প্রয়োজনে হোটেলের অনুমোদন বাতিল করার মতো কঠোর পদক্ষেপও নেওয়া হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসনের তৎপরতা:
দিঘায় হোটেলের কালোবাজারি রুখতে নবান্ন থেকে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর সোমবার দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যালয়ে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজির নেতৃত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌভিক চট্টোপাধ্যায়, নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএসডিএ-র নীলাঞ্জন মণ্ডল সহ চারটি হোটেল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
হোটেল মালিকদের দাবি: পরিকাঠামোর উন্নয়ন চাই:
অন্যদিকে, হোটেল মালিক সংগঠনের তরফে প্রশাসনের কাছে কিছু দাবিও জানানো হয়েছে। হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র জানান, নবনির্মিত জগন্নাথধাম উদ্বোধনের পর পর্যটকদের ভিড় বাড়ায় মন্দির সংলগ্ন জাতীয় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে রাস্তা সম্প্রসারণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এছাড়াও, কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় পথবাতির অভাব রয়েছে, সেগুলোতে আলো লাগানোর দাবিও জানানো হয়েছে।
প্রশাসনের এই কড়া পদক্ষেপের ফলে রথযাত্রার সময় পর্যটকরা দিঘায় এসে ন্যায্য ভাড়ায় হোটেল পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসনের এই কড়া নজরদারি ও জরিমানার হুঁশিয়ারি কতটা কার্যকর হয় হোটেল মালিকদের উপর।
