
বিহারের জামুই জেলা সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী হয়েছে, যা রীতিমতো আলোচনার ঝড় তুলেছে। যেখানে এক বিবাহিতা কাকিমা তাঁরই ভাইপোর সঙ্গে মোবাইলে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন এবং অবশেষে সেই সম্পর্ক পরিণতি পায় স্থানীয় মন্দিরে বিয়ের মাধ্যমে। এই ঘটনা এখন শুধু স্থানীয় স্তরেই নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
পাটনার বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সি আয়ুষী কুমারী, বর্তমানে জামুই জেলার সিকারিয়া গ্রামে তাঁর স্বামী বিশাল কুমার দুবে এবং তিন বছরের কন্যাসন্তানকে নিয়ে থাকতেন। তাঁদের সংসার জীবন আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিকই চলছিল। তবে, বিশালের ভাইপো সচিন দুবের বাড়িতে ঘন ঘন যাতায়াতের সূত্র ধরে আয়ুষীর জীবনে আসে এক অপ্রত্যাশিত মোড়। আলাপচারিতা থেকে মোবাইলে কথোপকথন এবং তারপর ধীরে ধীরে তা গভীর প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে এই গোপন যোগাযোগ।
এই ‘নিষিদ্ধ’ প্রেম এতটাই গভীর হয়ে ওঠে যে, আয়ুষী তাঁর স্বামী, সংসার, এমনকি নিজের সন্তানকেও ছেড়ে সচিনের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে, এই সম্পর্কের কারণে আয়ুষী ও তাঁর স্বামী বিশালের মধ্যে দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকে। বিশাল বিষয়টি নিয়ে প্রথমে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন এবং পরে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু তার আগেই আয়ুষী এক চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বামীর বাড়ি ত্যাগ করে সচিনের সঙ্গে পালিয়ে যান।
পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর, আয়ুষী ও সচিন গ্রামে ফিরে আসেন এবং স্থানীয় মন্দিরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মন্দিরে সচিন আয়ুষীর সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেন। বিয়ের পর আয়ুষী খোলাখুলি জানিয়েছেন, “ভালোবাসা সময় দেখে আসে না। সচিন আমার প্রকৃত জীবনসঙ্গী। আমি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলাম, তাই এই সিদ্ধান্ত।” তিনি আরও জানিয়েছেন যে, তাঁদের তিন বছরের কন্যাসন্তান আগের স্বামীর কাছেই থাকবে।
অন্যদিকে, স্বামী বিশাল এই ঘটনায় হতবাক এবং ক্ষুব্ধ। তিনি বলেছেন, “আমি ওর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছি, এখন আইনি পথেই বিচ্ছেদ চেয়ে নিয়েছি।”
এই ঘটনা ভারতীয় সমাজে প্রচলিত পারিবারিক ও সামাজিক রীতিনীতির বাইরে গিয়ে সম্পর্কের এক নতুন দিক তুলে ধরেছে, যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এটিকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার দিক থেকে দেখছেন, আবার অনেকে সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে চিহ্নিত করছেন।