আইসিকে গালিগালাজ! অনুব্রতর গ্রেফতারি নিয়ে বড় কথা জানিয়ে দিল পুলিশ?

বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে গালাগাল এবং তার মা ও স্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় অপমান করার অভিযোগ নিয়ে বিতর্কিত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (কেষ্ট) বিরুদ্ধে ওঠা মামলায় বীরভূম জেলা পুলিশ এবার এক চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনকে (NCW) পাঠানো দ্বিতীয় অ্যাকশন টেকেন রিপোর্টে পুলিশ দাবি করেছে যে, অনুব্রত তদন্তে ‘সম্পূর্ণ সহযোগিতা’ করছেন, যার ফলে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়নি। এই বক্তব্য বিজেপিসহ বিরোধী দলগুলোর তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

জাতীয় মহিলা কমিশনের চাপ ও পুলিশের দ্বিতীয় রিপোর্ট

এর আগে, আইসিকে হুমকির ঘটনায় অনুব্রতর বিরুদ্ধে পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। এমনকি কোন কোন ধারায় এফআইআর হতে পারে, সে বিষয়েও কমিশন পুলিশকে পরামর্শ দিয়েছিল বলে খবর। সেই চাপের মুখে পড়েই বীরভূম জেলা পুলিশ এবার তাদের দ্বিতীয় রিপোর্ট জমা দিয়েছে।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই রিপোর্টে পুলিশ উল্লেখ করেছে যে, অনুব্রত মণ্ডলের কাছ থেকে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণেই তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন অনুভব করা হয়নি।

বাজেয়াপ্ত আইসির ফোন: ফরেন্সিক পরীক্ষার অপেক্ষায়

রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে যে, অভিযোগকারী আইসি লিটন হালদারের দু’টি ফোন ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার পর তা খতিয়ে দেখে ফোনগুলি বাজেয়াপ্ত থাকবে কিনা, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই পদক্ষেপ আইসির অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

বীরভূম জেলা পুলিশের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ পুলিশের জোরালো সমালোচনা করে বলেছেন, “বাংলায় পুলিশের দুরবস্থা ফাঁস করে দিয়েছেন কেষ্ট। সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন তিনি দুষ্কৃতীদের পাশেই আছেন।” তার এই মন্তব্য তৃণমূল সরকারের প্রতি বিরোধীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগকেই যেন আরও জোরালো করেছে।

পেছনের গল্প: অনুব্রতর ক্ষমা প্রার্থনা এবং বিতর্ক

উল্লেখ্য, আইসিকে হুমকি দেওয়ার এই ঘটনায় অনুব্রত মণ্ডল জোর বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশে অনুব্রত নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেও, বিতর্ক থামেনি। এখন বীরভূম জেলা পুলিশের এই নতুন অবস্থান ঘটনাটিকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। অনুব্রতকে গ্রেফতার না করার পুলিশের এই সিদ্ধান্ত আইনি এবং রাজনৈতিক উভয় মহলেই আরও বিতর্কের জন্ম দেবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy