“চ্যবনপ্রাশ নিয়ে বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন?”-রামদেবের পতঞ্জলীকে হাইকোর্টে বড় নির্দেশ

বহুল প্রচারিত ডাবর চ্যবনপ্রাশের বিরুদ্ধে ‘বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন’ প্রচারের অভিযোগে বাবা রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদকে কড়া নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। বিচারপতি মিনি পুষ্কর্ণ ডাবরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে পতঞ্জলিকে অবিলম্বে এই ধরনের বিজ্ঞাপনের প্রচার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এই ঘটনা ভারতের আয়ুর্বেদ পণ্য বাজারে ব্র্যান্ডিং এবং বিজ্ঞাপনের নৈতিকতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

কী ছিল পতঞ্জলির বিজ্ঞাপন ও ডাবরের অভিযোগ?

ডাবরের অভিযোগ ছিল যে, পতঞ্জলি তাদের জনপ্রিয় চ্যবনপ্রাশ পণ্য সম্পর্কে অবমাননাকর বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। পতঞ্জলির বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছিল যে, শুধুমাত্র তারাই ‘আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র এবং শাস্ত্রীয় গ্রন্থ’ অনুসারে চ্যবনপ্রাশ তৈরি করে। এর পরোক্ষ অর্থ দাঁড়ায় যে, ডাবরের মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলোর এ বিষয়ে কোনো সঠিক জ্ঞান নেই।

ডাবর এই ধরনের বিজ্ঞাপনের ফলে তাদের ব্র্যান্ডের সুনাম ক্ষতির আশঙ্কায় দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তারা অবিলম্বে বিজ্ঞাপনগুলি স্থগিত করার পাশাপাশি ব্র্যান্ডের ক্ষতির জন্য ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেছে। ডাবর তাদের আবেদনে স্পষ্ট জানিয়েছে যে, পতঞ্জলির বিজ্ঞাপনটি মিথ্যাভাবে দাবি করছে যে তাদের চ্যবনপ্রাশই একমাত্র ‘আসল’ পণ্য। এছাড়া, পতঞ্জলির বিজ্ঞাপনে ৪০ ভেষজ চ্যবনপ্রাশকে ‘সাধারণ’ বলে উল্লেখ করারও তীব্র বিরোধিতা করেছে ডাবর। তাদের যুক্তি, এই ধরনের বিজ্ঞাপন ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করে এবং পণ্যের প্রতি তাদের আস্থা নষ্ট করে।

আদালতের নির্দেশ ও পূর্বের ঘটনা:

দিল্লি হাইকোর্ট ডাবরের আবেদন বিবেচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, এই প্রথম নয় যে রামদেবের পতঞ্জলি সংস্থাকে তাদের বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়তে হলো। এর আগেও, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের বিরুদ্ধে তাদের নানা পণ্য সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিল। কোভিড টিকা এবং আধুনিক চিকিৎসার বিরুদ্ধে পতঞ্জলির অপপ্রচারের অভিযোগেও আইএমএ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। সেই সময় বাবা রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণ বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই আদালত তাদের বিরুদ্ধে অবমাননার মামলা বন্ধ করে দেয়।

বর্তমান রায়টি আয়ুর্বেদিক পণ্য শিল্পের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং বিজ্ঞাপনের মান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার, ১৪ জুলাইয়ের শুনানিতে আদালত এই বিষয়ে কী চূড়ান্ত রায় দেয়।