News

৬০০ টাকা থেকে দৈনিক বেতন এখন ২৫,০০০ টাকা, এই তারকা বোলারের কথা শুনে অবাক অশ্বিনও

জীবনের শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। বরুণ চক্রবর্তী তখন ভাবেননি, একদিন ভারতের জার্সি গায়ে চাপিয়ে বিশ্বমঞ্চে বোলিং করবেন। আইপিএলের একটি মরশুমই বদলে দিয়েছিল তাঁর কপাল। এখন তিনি দেশের হোয়াইট বল ক্রিকেটে নির্ভরযোগ্য স্পিনারদের মধ্যে অন্যতম। ৩৩ বছর বয়সে এসে যখন অনেকে ক্যারিয়ারের অন্তিম লগ্নে পৌঁছান, তখন বরুণ মাত্র চার বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন।

সম্প্রতি রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের ঘাতপ্রতিঘাতের কথা খোলামেলা ভাবে তুলে ধরেছেন বরুণ।

বরুণ জানান,“কলেজ শেষ করে একটি আর্কিটেকচারাল কোম্পানিতে কাজ নিয়েছিলাম। শুরুতে মাসিক বেতন ছিল ১৪ হাজার টাকা। কিছুদিন পর বেড়ে হয় ১৮ হাজার। তারপর একসময় মনে হল, এ আমার জন্য নয়।”

এরপর শুরু হয় গিটার শেখা, মিউজিকের টান। সেখান থেকেও পিছু হটে তিনি খুলেছিলেন নিজস্ব ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা। একটা সময় সিনেমার জগতে ঢোকার চেষ্টাও করেছিলেন। জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে দৈনিক ৬০০ টাকার মজুরি নিয়ে শ্যুটিং ফ্লোরে কাটাতেন সময়। নিজেই বানিয়েছিলেন কিছু স্বল্প দৈর্ঘ্যের সিনেমাও। আর একদিকে খেলতেন টেনিস বল ক্রিকেট—একেবারেই শখের বশে।

বরুণের প্রতিভার চোখে পড়ে আইপিএল দলগুলির। এক মরশুমে দুরন্ত পারফরম্যান্স তাঁকে এনে দেয় জাতীয় দলের টিকিট। তবে প্রথম দিকে সেভাবে জায়গা ধরে রাখতে পারেননি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুযোগ পেলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হন। দল থেকে বাদও পড়েন।

তবে হার মানার মানুষ ছিলেন না তিনি। আবারও আইপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে জায়গা করে নেন জাতীয় দলে। ২০২4 সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুরন্ত বোলিং করে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠেন। গ্রুপ লিগ হোক বা নকআউট, বরুণ ছিলেন ভারতের অন্যতম নির্ভরযোগ্য অস্ত্র।

অশ্বিনের প্রশ্নের উত্তরে বরুণ জানান, বর্তমানে তিনি এক একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে দিনে ৩০০ ডলার অর্থাৎ প্রায় ২৫,৬৫২ টাকা রোজগার করেন। একসময় যেখানে দিনে ৬০০ টাকায় সিনেমার সেটে কাজ করতেন, সেখানে আজ তাঁর বেতন বেড়েছে প্রায় ৪২০০ শতাংশ!

এটা এক তরুণের অদম্য স্বপ্নের গল্প, যিনি স্থির ছিলেন না, কিন্তু হালও ছাড়েননি। কখনও অফিস ডেস্কে, কখনও সিনেমার ক্যামেরার পেছনে, কখনও গিটারের তারে—শেষমেশ যেখান থেকে উঠে এসেছেন, তা ক্রিকেট মাঠের ২২ গজ।

Exit mobile version