“হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের ট্র্যাজেডি”, তেহরানকে হুঁশিয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের

ইরানকে বিশ্বের “এক নম্বর সন্ত্রাসে মদতদাতা রাষ্ট্র” হিসেবে ব্যাখ্যা করে, ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে সাম্প্রতিক মার্কিন হামলার বিষয়ে এবার সরাসরি জাতির উদ্দেশে মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান—এই তিন কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় হামলাকে তিনি বললেন “অসাধারণ সামরিক সাফল্য”। একই সঙ্গে ইজরায়েল ও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি।

ট্রাম্পের বার্তা: শান্তি না এলে ভবিষ্যৎ আরও ভয়ঙ্কর
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন,
“আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধিকরণ ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতা থেকে উদ্ভূত পারমাণবিক হুমকি রুখে দেওয়া। এই মিশন ছিল অসাধারণ সফল।”

তিনি স্পষ্ট জানান, তিনটি কেন্দ্র—ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান—মার্কিন বাহিনীর আক্রমণে কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। তবে এখানেই থেমে থাকছে না আমেরিকা। ট্রাম্পের কড়া হুঁশিয়ারি,
“ইরান যদি এবারও শান্তির পথ না নেয়, তাহলে সামনে আরও বড় হামলার জন্য প্রস্তুত থাকুক। সেই আঘাত হবে আরও সহজ, আরও ভয়াবহ। এখনও অনেক টার্গেট বাকি আছে।”

তিনি আরও বলেন,
“এটা চলতে পারে না। হয় শান্তি আসবে, না হলে ইরানকে আরও বড় ট্র্যাজেডির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে—গত আট দিনে যা হয়েছে, তা তো কেবল শুরু।”

কেন B-2 বম্বারকে পাঠানো হয়েছিল ইরানে?
বিশ্বের অন্যতম দুর্ধর্ষ যুদ্ধবিমান B-2 Spirit Stealth Bomber-কে কেন এই অভিযানে ব্যবহার করা হল, তা নিয়েও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যুদ্ধবিমান অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ‘রাডার-এভাসিভ’ প্রযুক্তিতে তৈরি।

এটি সাধারণ রাডারে ধরা পড়ে না, ফলে শত্রুর আকাশসীমায় অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে

একটানা প্রায় ৬,০০০ নটিক্যাল মাইল পাড়ি দিতে পারে, তাও জ্বালানি ছাড়াই

উঁচু অক্ষাংশেও নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম

এই বিমান থেকেই ফেলা হয় GBU-57 ‘Massive Ordnance Penetrator’, যা ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনাও ধ্বংস করতে পারে

এই প্রযুক্তিগত কারণে এই হামলায় B-2 বম্বার ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের ‘প্রথম পছন্দ’।

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ
এই ঘটনার পর গোটা বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ। কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন—এই হামলা কি বৃহত্তর যুদ্ধের সূচনা? নাকি ইরান এবার শান্তির টেবিলে বসবে?

ট্রাম্পের সাফ কথা,
“এবার শান্তির সময়। ইরান যদি তা না বোঝে, তাহলে তারা যে ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে, তা আর স্পষ্ট করে বলার প্রয়োজন নেই।”

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy